স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: অনেক রাজ্য চাপের কাছে নতিস্বীকার করলেও পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমিক বিরোধী ‘লেবার কোড’ মানবে না। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ওই আইনের বিরোধী তামিলনাড়ু সরকার। শুক্রবার শিলিগুড়ি বাঘাযতীন পার্কে শ্রমিক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ওই মন্তব্য করেন রাজ্যের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং আইএনটিটিইউসি রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্রমমন্ত্রী জানান, কোনওভাবেই শ্রমিকদের আট ঘণ্টার বেশি সময় কাজ করতে দেবে না এই দুই রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রমিকদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে লেবার কোডের বিরোধিতা করছেন।
এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমনীতিকে তীব্র আক্রমণ করেন দুই বক্তা। তাঁদের অভিযোগ, মহান উদ্দেশ্যে মে দিবস পালন করা হয়। যেসব রাজ্য কেন্দ্রের লেবার কোড মেনে নিয়েছে, তাদের শ্রমিক দিবস পালন করার অধিকার নেই। শ্রমিকদের আট ঘণ্টার বেশি কাজ করার কোনও নিয়ম নেই। কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে রক্তক্ষয়ের মাধ্যমে শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার কেড়ে নিতে চাইলে রাজ্য বাধা দেবেই। পশ্চিমবঙ্গে এই লেবার কোড চলবে না। শ্রমমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্রের দাবি, উৎপাদন বাড়াতে মালিকপক্ষ যদি মনে করে, শ্রমিকদের আট ঘণ্টার বেশি কাজ করতে হবে। এটা ঘোরতর শ্রমিক বিরোধী আইন। এটা মানা হবে না। আমাদের রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেবার কোড চালু হতে দেননি।” আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বলেন, “যে সব রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের ওই আইন মেনেছে, তারা শ্রমিকদের কথা ভাবে না। আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রমিকদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। তাই আমরা ওই আইনের তীব্র বিরোধিতা করেছি।”
এদিনের পশ্চিমবঙ্গ শ্রমিক উন্নয়ন পরিষদের তরফে মে দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শ্রমমন্ত্রী এবং ঋতব্রত ছাড়াও ছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সহ-সভাধিপতি রোমা রেশমি এক্কা-সহ অন্যরা। মঞ্চে অতিথিদের এদিন চা বাগানের শ্রমিক মেয়েরা বরণ করেন। প্রদীপ প্রজ্বলনের পর মেয়র গৌতম দেব চা শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকার কেমন উন্নয়নমূলক কাজ করেছে তা জানান।
এরপরই শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, চা শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ২৩০ টাকা হয়েছে। জুন মাস থেকে সেই বেতন ২৫০ টাকা করা হবে। অথচ প্রতিবেশী অসম সরকার ২২০ টাকা দিচ্ছে। এ রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চা শ্রমিকদের বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হচ্ছে। অসমে চা শ্রমিকদের টাকা দিয়ে রেশন কিনতে হয়। চা শ্রমিকদের স্বার্থে রাজ্য সরকার ৪২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ৭১টি ক্রেশের বন্দোবস্ত করেছে। সেখানে মায়েরা শিশুদের রেখে কাজে যেতে পারেন এবং দিনের শেষে শিশুদের নিয়ে অনায়াসে ঘরে ফিরতে পারছেন। শুধু তাই নয়, আগামীতেও চা শ্রমিক এবং অন্যান্য শ্রমিকদের জন্য একাধিক প্রকল্প আনতে চলেছে রাজ্য সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.