Advertisement
Advertisement
WB Govt warns potato sellers

‘ধর্মঘট রুখতে চরম ব্যবস্থা নেওয়া হবে’, আলু ব্যবসায়ীদের পালটা হুঁশিয়ারি রাজ্যের

সোমবার আলু ব্যবসায়ীদের অনুরোধেই তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। তার আগেই রাজ্যের কড়া মনোভাবের কথা জানিয়ে রাখলেন তিনি। বেচারামের দাবি, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রাজ্যের মানুষের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে বাইরে আলু পাঠানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে।

WB Govt warns potato sellers about calling strike

ফাইল ছবি।

Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:December 2, 2024 9:59 am
  • Updated:December 2, 2024 10:34 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট রুখতে যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য সরকার। এমনকী চরম সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হবে না। এমনই হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। সোমবার আলু ব্যবসায়ীদের অনুরোধেই তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মন্ত্রী। তার আগেই রাজ্যের কড়া মনোভাবের কথা জানিয়ে রাখলেন তিনি। বেচারামের দাবি, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রাজ্যের মানুষের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে বাইরে আলু পাঠানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। আলু রপ্তানিতে মুখ্যমন্ত্রী রাশ না টানলে আলুর দাম কেজিপ্রতি ৫০ টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

খোদ মুখ্যমন্ত্রী কয়েকদিন আগে নবান্নে বৈঠক করে অভিযোগ করেছিলেন। এদিন সেই অভিযোগই মান্যতা পেয়েছে। প্লাস্টিক ব্যাগের আড়ালে আলু ভিন রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে সীমান্তবর্তী জেলা থেকে খবর আসছে। শনিবার ৫১০ ব্যাগ আলু ধরা পড়েছে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায়। বারাবনির গৌরান্ডি ব্রিজ দিয়ে আলু নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনি থানার পুলিশ তা ধরে ফেলে। পুলিশের নজর এড়াতে আলুর বস্তা ছিল প্লাস্টিকে ঢাকা। চালানে লেখা ছিল প্লাস্টিক ব্যাগ। ভিতরে মেলে ৫১০ ব্যাগ আলু। চালক ও খালাসিকে গ্রেফতার করা হয়। ওই আলু হুগলির পাণ্ডুয়া থেকে বিহারের গয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এইরকম আরও খবর এসেছে জেলা থেকে। আসানসোলের কুলটিতে জাতীয় সড়কের উপর ও রূপনারায়ণপুর, রুনাকুড়াঘাটের বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানার চেকপোস্টে আলুবোঝাই লরি আটকেছে পুলিশ। লরিগুলিকে পশ্চিমবঙ্গে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাতে ডুবুরডিহি চেকপোস্টে দুটি আলুর গাড়ি ঘুরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। রবিবার সকালে গিয়ে দেখা গেল রীতিমতো ক্যাম্প করে আলুর গাড়ি আটকাচ্ছে পুলিশ।

Advertisement

এদিকে, ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দেওয়ায় ফের আলুর দাম বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, বর্তমানে রাজ্যের হিমঘরগুলিতে প্রায় ৭ লক্ষ মেট্রিক টন আলু মজুত আছে। রাজ্যে ডিসেম্বর মাসে আলু খরচ হবে সাড়ে তিন থেকে চার লক্ষ মেট্রিক টন। বাড়তি তিন লক্ষ মেট্রিক টন ভিন রাজ্যে না গেলে ক্ষতি হবে ব্যবসায়ীদের। এদিকে, আলুর ব্যবসায়ীদের ডাকা ধর্মঘট নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ টাস্ক ফোর্স। টাস্ক ফোর্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলের দাবি, আলু ব্যবসায়ীরা মুখ্যমন্ত্রীকে কথা দিয়েছিলেন ২৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করবেন। কিন্তু সেই অবস্থান থেকে তাঁরা সরে এসেছেন। ১০ নভেম্বরের পর থেকে আলুর দাম বাড়িয়ে কেজি প্রতি ২৮.৫ টাকা করা হয়েছে। বর্ধিত মূল্যে আলু কিনতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

এই সংঘাতের মধ্যেই আলু ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে হিমঘরে আলু সংরক্ষণের সময়সীমা বাড়ল। নবান্ন জানিয়ে দিল, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা হিমঘরে আলু রাখতে পারবেন। তবে এর জন্য বাড়তি টাকা দিতে হবে তাঁদের। জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের হিমঘরগুলির জন্য কুইন্টাল কিছু ১৯ টাকা ১১ পয়সা এবং দক্ষিণবঙ্গের হিমঘরগুলির জন্য ১৮ টাকা ৬৬ পয়সা বাড়তি গুনতে হবে।

কিছুদিন আগেই নবান্নে আলু এবং পিঁয়াজের দাম নিয়ে টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে বাংলার বাইরে আলু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা বলেন। প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন রাজ্যের আলু ব্যবসায়ীরা। তার আগেই রাজ্য সরকার কড়া অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়ে রাখল। বেচারামের দাবি, ৪০-৫০ জন আলু ব্যবসায়ী বাড়তি মুনাফার জন্য রাজ্যবাসীকে বিপাকে ফেলার লাগাতার চেষ্টা করছেন। এদের তালিকা রাজ্য সরকারের হাতে এসেছে। প্রয়োজনে এঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেচারামের দাবি, হিমঘরে মজুত আলু দিয়ে বড়জোর ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এই অবস্থায় যদি বাংলার বাইরে আলু চলে যায় তা হলে আলুর দাম কেজি প্রতি ৫০ টাকা হয়ে যাবে। যা কোনওভাবেই কাম্য নয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement