দীপঙ্কর মণ্ডল: বিশুদ্ধ পানীয় জলের হাহাকার। কৃষিতেও সমস্যা। বহু এলাকায় শুধু বর্ষাকালেই চাষ হয়। ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পে কিছুটা সুরাহা হলেও রাজ্যের ‘জল সংকট’ মেটেনি। কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘জল বাঁচাও জীবন বাঁচাও’ যাত্রার সূচনা করেছেন। সরকারের এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে এবার স্কুলপাঠ্যে বিষয়টি অন্তভুর্ক্ত হচ্ছে।
তৃতীয় শ্রেণির সিলেবাসে ‘জল সংরক্ষণ’ বিষয়টি থাকছে। আর্সেনিকের ছোবলে ভুগতে হয় প্রচুর মানুষকে। বছরে অন্তত একবার পরীক্ষাগারে পানীয়জল পরীক্ষা করার শিক্ষা দেওয়া হবে ছাত্রছাত্রীদের। সরকারি আধিকারিকরা মনে করছেন, ছেলেমেয়েদের মাধ্যমে অভিভাবকরা বেশি করে সচেতন হবেন। পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা থাকছে পাঠ্যে। বেশি করে জোর দেওয়া হচ্ছে বৃষ্টির জলের উপর। বিশেষজ্ঞদের মতে, সংরক্ষিত বৃষ্টির জলে অন্তত চার মাস চালিয়ে নেওয়া যায়। রাজ্য সরকার ‘জল ধরো জল ধরো’ প্রকল্পে পুকুর কাটায় জোর দিচ্ছে। একশো দিনের কাজে জেলায় জেলায় পুকুর কাটা চলছে। সরকারি কাজ ছাড়াও প্রত্যেক বাড়িতে যাতে বৃষ্টির জল ধরে রাখা হয় সেই শিক্ষা দেওয়া হবে স্কুলস্তরে।
শহর হোক বা গ্রাম, পানীয় জলের অপচয় হয়েই চলেছে। নলবাহিত জলের কল অযথা খোলা থাকছে। মহানগরীর বিভিন্ন গলিতেও এই ছবি দেখা যায়। অযথা পানীয় জল নষ্টের খবর কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই সরকারের কাছেই আছে। দুই তরফেই নানা সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর দ্বিতীয় দফায় এই বিষয়ে বিশেষ জোর দিয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় কোনও বোর্ডের সিলেবাসে জল সংরক্ষণের বিষয়টি এখনও অন্তভুর্ক্ত হয়নি। রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দপ্তর এই ক্ষেত্রে পথিকৃত। ১৯ লাইনের একটি ছড়া এই উদ্দশে লেখা হয়েছে। সেই ছড়ার ছত্রেছত্রে জল বাঁচানোর কথা বলা হয়েছে।
একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রত্যেকদিন ৫০ থেকে ৬০ লিটার জল লাগে। পানীয় হিসাবে ৫ লিটার, শৌচ কাজে ১০-১৫ লিটার, স্নানে ১৫-২০ লিটার, বাসন ধোওয়া ও কাপড় কাচায় ৭-১২ লিটার এবং টয়লেটে ফ্ল্যাশ থাকলে বাড়তি ১৫ লিটার জল লাগে। বিকাশ ভবনের এক আধিকারিক এক প্রসঙ্গে বলেন, এই হিসাবের বাইরেও অনেকে জল অপচয় করেন। স্কুল পাঠ্যে পানীয় জল অপচয়ের কথা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে। পরে এই বিষয়ে স্বল্প দৈর্ঘের সিনেমা তৈরির কথাও ভাবছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.