সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেঘলা আকাশ, শিরশিরে বাতাস বইছে। ওই গোমড়ামুখো আকাশের নীচেই ‘ভাল বাসা’র সামনে ভিড় করেছেন কিছু মানুষজন। কারণ, সেখানেই শায়িত রয়েছেন প্রিয় লেখিকা। ওঁরা প্রয়াত সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেনের অনুরাগী। প্রিয় লেখিকাকে শেষবারের মতো ক্ষণিক চাক্ষুষ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তাঁর হিন্দুস্তান পার্কের বাসভবনের বাইরে। বৃহস্পতিবার রাতেই অনেককে ফিরতে হয়েছে ভগ্ন হৃদয়ে। কারণ, বাড়ির ভিতর ঢোকার অনুমতি পাননি কেউই। আজ সকালে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় সস্ত্রীক ‘ভাল বাসা’পৌঁছলেন নবনীতা দেবসেনকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।
রাজ্যপাল বলেন, “বাংলা সাহিত্যজগতের বিরাট ক্ষতি হল। গতকালই শুনেছি দুঃসংবাদ। তাই সকাল হতেই ‘ভালো বাসা’য় চলে এলাম স্ত্রী’কে নিয়ে। ওঁর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।”
সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেনের মহাপ্রস্থানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলা সংস্কৃতিজগতে। বৃহস্পতিবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ নিজস্ব বাসভবন ‘ভাল বাসা’য় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গতকাল রাতেই সাহিত্যিকের পরিবার সূত্রে খবর মিলেছিল, রাতে বাড়িতেই থাকছে তাঁর মরদেহ। শুক্রবারও তার অন্যথা হল না। নিজের ‘ভাল বাসা’তেই শায়িত রইল সাহিত্যিক নবনীতার মরদেহ। কিন্তু প্রিয় লেখিকাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে অনুরাগীদের জন্য কী কর্মসূচী নেওয়া হবে, তা শুক্রবার সকাল অবধি অধরাই রয়ে গিয়েছিল। তবে সূত্রের খবর, শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ হিন্দুস্তান পার্কের ‘ভাল বাসা’ থেকে বের করা হবে নবনীতা দেবসেনের মরদেহ। তার আগেই লেখিকাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বাসভবনে গেলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। কথা বললেন লেখিকার দুই মেয়ে অন্তরা এবং নন্দনা সেনের সঙ্গে। জানালেন শোকবার্তা।
বৃহস্পতিবার রাতেই সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেনের প্রয়াত হওয়ার খবর পেয়ে তাঁর বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসনেত্রী মালা রায়, সিপিএম নেতা রবীন দেব এবং সুজন চক্রবর্তী। কিন্তু লেখিকার পরিবারের লোকেরা সেসময় কারও সঙ্গেই কথা বলতে চাননি।
দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে ভুগছিলেন নবনীতা দেবসেন। ভি্ন্ন স্বাদের লেখায় গত পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। ১৯৭৫ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় অধ্যাপনা করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামুলক সাহিত্য বিভাগে। শুধু তাই নয়, ইউরোপ ও আমেরিকার বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়েও ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন নবনীতা দেবসেন।
ছবি- অরিজিৎ সাহা, পিন্টু প্রধান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.