স্টাফ রিপোর্টার: সবজির জোগান বাড়িয়ে, দাম কমিয়ে পুজোর আগে থেকেই রাজ্যবাসীর মুখে হাসি ফুটিয়েছে নবান্ন। সামনে দীপাবলি, ছট-সহ আরও একাধিক উৎসব। এই সময় দাম নিয়ন্ত্রণে ফের তৎপর হওয়ার বার্তা দিয়ে সরকারি পদক্ষেপের জন্য গত এক সপ্তাহে ১০টি সবজির দাম কতটা কমেছে। রবিবার তারও তালিকা প্রকাশ করল নবান্ন।
এই তালিকা অনুযায়ী যা দেখা যাচ্ছে, সুফল বাংলা স্টলে গত ১২ অক্টোবর কেজি প্রতি টমেটো বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকায়। ১৯ অক্টোবর টমেটোর দাম কমে হয়েছে ৬৫ টাকা। অর্থাৎ কেজি প্রতি টমেটোর দাম এক সপ্তাহে ২০ টাকা কমেছে। একই অবস্থা শসা, বেগুন, ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙে, লাউ, করলা, পটল, পিঁয়াজের। শসার দাম ৫২ টাকা থেকে কমে ৩৫ টাকা হয়েছে। ঢ্যাঁড়শ-ঝিঙের দাম কেজি প্রতি ১৪ টাকা, করলা ১৩ টাকা, বেগুনের দাম ১৫ টাকা, মাকড়া বেগুন ১০ টাকা, লাউ ৮ টাকা, পটল ৪ টাকা কমেছে।
আলু-পিঁয়াজের সরবরাহ বাড়িয়েও দাম নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, কলকাতার বিভিন্ন বাজারে কেজি প্রতি ৩০-৩২ টাকায় এবং জেলার বিভিন্ন বাজারে ২৬-২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আলু। শহর ও শহরতলির সুফল বাংলার বিপণি থেকে জ্যোতি আলু ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। নবান্নের দাবি, এই মুহূর্তে রাজ্যের হিমঘরে ১৯ লক্ষ মেট্রিক টন আলু আছে। যা নতুন আলু বাজারে আসার আগে পর্যন্ত রাজ্যের পক্ষে পর্যাপ্ত। মুখ্যমন্ত্রী আলুর পাশাপাশি পিঁয়াজের সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণে জোর দিতে বলেছিলেন।
সেই নির্দেশ মেনেই রাজ্যের কৃষি দপ্তর আলু বীজের উৎপাদন বাড়িয়েছে। পাশাপাশি, নাসিকের পিঁয়াজের উপর নির্ভরতা কমাতে সুখসাগর পিঁয়াজ সরাসরি চাষির থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে কিনে একই দামে সুফল বাংলায় বিক্রি করা হচ্ছে। সুফল বাংলা সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০ টনের বেশি সুখসাগর পিঁয়াজ সংগ্রহ করা হয়েছে। টমেটো-কাঁচালঙ্কার দাম নিয়ন্ত্রণে সুফল বাংলা কলকাতা-সহ সারা রাজ্যে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কম দামে সরবরাহ করছে। মাঠ থেকে সরাসরি টমেটো-লঙ্কা সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ৫৮টি ফসল ক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
সংগৃহীত ফসল সরাসরি সুফল বাংলার ৫১৭টি স্টল এবং অতিরিক্ত ১০০টির বেশি বিশেষ বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করে ক্রেতাদের কাছে বাজার অপেক্ষা ১৫ -২০% কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে বাজার পরিদর্শন ও নজরদারির কাজ। নবান্ন জানিয়েছে, কলকাতা-সহ রাজ্যের সব জেলায় কলকাতা পুরসভা, জেলা প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের সমন্বয়ে তৈরি টাস্ক ফোর্স নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করছে। উদ্দেশ্য একটাই, সবজির জোগান এবং দাম স্থিতিশীল রাখা। নবান্নের দাবি, এই ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণের জন্যই পুজোর মুখে ও উৎসব পরবর্তী সময়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
আমজনতাকে মূল্যবৃদ্ধির ছ্যাঁকা থেকে বাঁচাতে যেমন সুফল বাংলায় সস্তায় ফল-সবজি বিকোচ্ছে রাজ্য সরকার, পাশাপাশি কৃষক যাতে উপযুক্ত দাম থেকে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য সরাসরি কৃষকদের থেকে সবজি, ফল সংগ্রহ করার প্রক্রিয়াও জোরদার করা হয়েছে। এদিন নবান্নর তরফে ৯৯টি সবজি ও ফলের দামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে চাষিদের থেকে সরাসরি কী দামে সবজি-ফল কেনা হচ্ছে তার যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, তেমনই কত দামে তা বিক্রি করা হচ্ছে তালিকাতে তাও স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.