ছবি: প্রতীকী
দীপালি সেন: রাজ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকরের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করল উচ্চশিক্ষা দপ্তর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের নেতৃত্বাধীন এই কমিটিকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এই কমিটির রিপোর্ট তথা মতামতের ভিত্তিতেই রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ৪ বছরের স্নাতক ডিগ্রি কোর্স চালুর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসরণে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তৈরি ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক ফর আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামস’ শীর্ষক গাইডলাইনটি গত ১৭ মার্চ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে পাঠিয়েছিল রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর। বলা হয়েছিল, গাইডলাইনটি কার্যকর করতে পদক্ষেপ নিতে। স্নাতকস্তরের পঠন-পাঠনে আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ রয়েছে ইউজিসির সেই গাইডলাইনে। যার মধ্যে অন্যতম হল, তিন বছরের পরিবর্তে অনার্স ডিগ্রি পেতে হলে পড়ুয়াকে চার বছর পড়াশোনা করতে হবে।
গত শনিবারই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, দপ্তরের তরফে নির্দেশিকা পাঠানো হলেও এখনই রাজ্যে স্নাতকস্তরে ৪ বছরের পাঠ চালু হচ্ছে না। জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকরের আগে সুবিধা, অসুবিধাগুলি সম্পর্কে নেওয়া হবে উপাচার্যদের মতামত। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতেই নেওয়া হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তার জন্য গঠন করা হবে একটি কমিটি। সেই মতো গঠন করা হল ছয় সদস্যের কমিটি। যাদবপুরের উপাচার্যের পাশাপাশি কমিটিতে রয়েছেন বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্মাল্য নারায়ণ চক্রবর্তী, উচ্চশিক্ষা সংসদের ভাইস চেয়ারপার্সন কৌশিকী দাশগুপ্ত ও সংসদের যুগ্মসচিব মৌমিতা ভট্টাচার্য (কমিটির আহ্বায়ক)। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও তাদের অধীনস্থ কলেজগুলিতে নতুন ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ কার্যকর করার বিষয়ে খতিয়ে দেখবে।
তবে, এই কমিটিতে শিক্ষাবিদ, শিক্ষক, ছাত্র ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতিনিধিদের না রাখায় প্রতিবাদ জানিয়েছে একাধিক অধ্যাপক সংগঠন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন কুটার সভাপতি মহালয়া চট্টোপাধ্যায় ও সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায় যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘‘রাজ্যের প্রাচীনতম ও বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়, যার অধীনে দেড়শোর উপর স্নাতকস্তরের কলেজ আছে সেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও প্রতিনিধি না রাখায় সমিতির সকলেই ক্ষুব্ধ ও অপমানিত।’’ আবার রবীন্দ্রভারতীর অধ্যাপক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘দায়িত্বশীল শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠনগুলির বাইরে রেখে শিক্ষা সংক্রান্ত আলোচনা ফলপ্রসূ হতে পারে না।’’ সার্বিকভাবে রাজ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে আবুটা। তাদের বক্তব্য, নিত্য নতুন কমিটি না বসিয়ে রাজ্য সরকার তার নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করুক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.