দীপঙ্কর মণ্ডল: করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারকে একাধিক তোপ দাগার পর রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে ফের স্বমূর্তিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সোমবার তিনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসনিক এবং শিক্ষা) পদে অধ্যাপক গৌতম চন্দ্রকে নিয়োগ করেছেন। কিন্তু উচ্চশিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, এই নামের সুপারিশ করা হয়নি রাজ্যপালের কাছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাই রাজ্যপালের এই নিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “রাজ্যপাল বিজেপির প্রতিনিধিকে নিয়োগ করেছেন। এই সিদ্ধান্ত কোনও মতে মানব না।”
রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের নীতিগত বিরোধ লেগেই রয়েছে। যাদবপুর এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দিয়ে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে বাধা পেয়েছিলেন। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তিনি একাধিকবার মুখ খুলেছেন। সম্প্রতি করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল ধনকড়। তবে সব সময়ই তাঁর বক্তব্য, তিনি যা করছেন তা সবই আইন মেনে করছেন। এদিন একটি অর্ডার জারি করেছেন ধনকড়। সেখানে তিনি বলেছেন, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ৯-এ ধারার এক নম্বর উপধারার আইন মেনে তিনি অধ্যাপক চন্দ্রকে সহ-উপাচার্য পদে বসিয়েছেন। যাঁর মেয়াদ হবে চার বছর অথবা ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত।
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, তিনি কোনওভাবেই আচার্যের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন না। এমনকী নবনিযুক্তকে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন পার্থবাবু। এ রাজ্যে রাজ্যপালের চেয়ারে বসার পর থেকেই জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে নবান্নের বিরোধ তৈরি হয়। শুরুতেই বিভিন্ন জেলায় তিনি বৈঠক করতে শুরু করেন। রাজ্যের শাসক দল বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখেনি। মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন। শাসক দল তৃণমূলের নেতাদের অনেকের মুখে তাঁকে ‘পদ্মপাল’ বলেও সম্বোধন করতে শোনা যায়। শিক্ষা মহলের বক্তব্য, করোনা এবং আমফান পরবর্তী সময়ে রাজ্যপালের নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে নবান্ন যে তোলপাড় হবে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.