স্টাফ রিপোর্টার: কথা দিয়েছেন দুঃসময়ে পাশে থাকার। হতাশ না হয়ে ধৈর্য রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। নবান্ন থেকে ঘোষণা করেছেন, রাজ্য সরকার খতিয়ে দেখছে বিকল্প পথও। আজ সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের জন্য ভবিষ্যতের কী বার্তা দেন, সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন চাকরিহারারা। তিনিই যে শেষ ভরসা, সেটা জানেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি যাওয়া প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মীরা। তাই ‘ডিপ্রাইভড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’ তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তাদের সভায়। সেই সভাই আজ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে হতে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি যাবেন। শুনবেন তাঁদের কথা। বলেছেন, “এটুকু বলতে যাব, ধৈর্য হারাবেন না। মানসিক চাপ নেবেন না। আমরা চেষ্টা করব, যাতে তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান হয়।”
আর এই বক্তব্যকেই পাথেয় করে সোমবারের সকালের আশায় বুক বেঁধেছেন রাজ্যের চাকরিহারারা। রবিবার শহিদ মিনারে অবস্থানে বসে থাকা চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা জানিয়েছেন, “আমরা দেখেছি, মুখ্যমন্ত্রী অনেক সমস্যায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আমাদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী কিছু করবেন, এই ভরসায় রয়েছি।” এদিন বৈঠকে থাকার কথা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুরও। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রবিবার রাতেই কলকাতায় এসে পৌঁছচ্ছেন চাকরিহারার। কেউ আসবেন সকালে। তাঁদের সবার কথাই সাংগঠনিকভাবে উঠে এল ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর নেতা মেহবুব মণ্ডলের বক্তব্যে, “এর আগেও আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে দেখেছি, অনেকের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সমাধানের পথ দেখিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের আশা যে কোনও উপায়ে উনি আমাদের বাঁচান। কীভাবে বাঁচাবেন, সেটা মুখ্যমন্ত্রী দেখবেন।”
তবে কেউ কেউ চাইছেন না, তাঁদের সমস্যার সমাধান হোক। এই আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে তাঁদের মধ্যে। তাঁরা জানিয়েছেন, “আমরা বৈঠকে থাকতে চাই। এই বৈঠক ভেস্তে দেওয়ার জন্য অনেকে চেষ্টা করবে। এই ধরনের ঘটনা ঘটলে আমাদেরই ক্ষতি।” এদিকে ইন্ডোর স্টেডিয়ামের বৈঠকে কেউ যাতে অশান্তি তৈরি করতে না পারে তার জন্য আগে থেকেই সতর্ক পুলিশ প্রশাসনও। সূত্রের খবর, প্রশাসনের দেওয়া কুপন দেখিয়ে বৈঠকে ঢুকতে পারবেন চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরা। রবিবার শহিদ মিনারে চাকরিহারাদের প্রায় ১২ হাজার কুপন দেওয়া হয়েছে বলে খবর। তবে এদিনও ঘুরে ফিরে উঠেছে যোগ্য-অযোগ্য প্রসঙ্গ। দেশের শীর্ষ আদালত কেন তড়িঘড়ি রায় শোনাল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিহারারা। তাঁদের যুক্তি, এর আগে সুপ্রিম কোর্টে কেন রায় স্থগিত করা হয়েছিল? এ প্রসঙ্গ টেনে মেহবুব বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায় আমরা মানছি না। এর আগে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। বুঝেছিলেন যে এখানে যোগ্যদের সঙ্গে অযোগ্যরাও রয়েছেন। তাই তিনি স্থগিতাদেশ দেন। কিন্তু বর্তমান প্রধান বিচারপতি যে রায় দিয়েছেন তাতে আমাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.