সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা মোকাবিলায় আরও সতর্ক রাজ্য প্রশাসন। সন্দেহভাজন কোনও ব্যক্তি চিকিৎসা এড়িয়ে গেলে, কোয়ারেন্টাইনে না থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া আইন প্রয়োগ করা হবে। কর্ণাটক, দিল্লির পথে হেঁটে এই আইন প্রয়োগের পথে হাঁটল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। করোনা মোকাবিলায় তৈরি হচ্ছে ২০০ কোটি টাকার তহবিল। আজ নবান্নে করোনা নিয়ে জরুরি বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলন করে একাধিক নয়া সিদ্ধান্তের কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
‘বিশ্বব্যাপী মহামারি’র তকমা পাওয়ার পর দেশজুড়ে নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে আরও সতর্কতা জারি হয়েছে। বেশ কয়েকটি রাজ্য ‘বিপর্যয়’ ঘোষণা করে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিং মল, হোটেল, রেস্তরাঁ বন্ধ রাখা হয়েছে। আতঙ্কের জেরে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের মধ্যে আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাওয়ায়, তা রুখতে ‘এপিডেমিক ডিজাস্টার অ্যাক্ট’ লাগু করা হয়েছে। এরাজ্যে তেমন কোনও ঘটনা না ঘটলেও, আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে এবার সেই পথে হেঁটে সেই আইন লাগু করার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ৩ লক্ষ ২৪ হাজার মানুষকে করোনার জন্য স্ক্রিনিং করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ৫০০০ জনকে। এখনও কারও দেহে COVID-19 জীবাণু মেলেনি। এটাই অনেকটা স্বস্তির বিষয়।
সংক্রমণের আশঙ্কায় ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের সরকারি, বেসরকারি স্কুল-কলেজ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। এবার সেই ছুটি ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বন্ধ থাকবে আইসিডিএস সেন্টার, সিনেমা হল, শুটিংও। করোনা মোকাবিলায় ২০০ কোটি টাকা তহবিল তৈরি করা হয়েছে। যার আওতায় থাকছে ১০ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য ৫ লক্ষ টাকা করে স্বাস্থ্যবিমা করার সুযোগ। এছাড়া এই তহবিলের অর্থে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ২ লক্ষ সংক্রমণ নিরোধক পোশাক, ২ লক্ষ N95 মাস্ক, ৩০০ ভেন্টিলেশন কেনার বরাত দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। সরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তোলার পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলির কাছে তিনি আবেদন জানান যাতে করোনা আক্রান্ত রোগীকে না প্রত্যাখ্যান করা হয়। গণপরিবহণের ক্ষেত্রে অযথা আতঙ্কিত না হওয়া এবং আতঙ্ক না ছড়ানোর পরামর্শ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন নবান্নে প্রবেশের আগে মুখ্যমন্ত্রী নিজে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে হাত ধুয়ে নেন। সঙ্গে থাকা আধিকারিকদেরও হাত ধুয়ে তবেই বৈঠকে যোগ দিতে বলেন। তার আগে এদিন নবান্ন থেকে বিনামূল্যে মাস্ক বিলি করা হয়। বৈঠক শেষে তাঁর পরামর্শ, সব অফিসেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। অফিসে প্রবেশ এবং বেরনোর সময়ে নিয়মিত হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। রোগ কোনওভাবে গোপন না করে, তার চিকিৎসার জন্য জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে বলে মনে করছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.