কৃষ্ণকুমার দাস ও ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সামনেই উপনির্বাচন (Bhabanipur By-election)। ‘ঘরের মেয়ে’র চেনা মাটি ভবানীপুর। আর সেই কারণেই প্রায় ঘরে ঘরে গিয়ে জনসংযোগ করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কারণ, এখানে সকলেরই ভরসা যে তিনিই। প্রচারে বেরিয়ে প্রত্যেকের মনের সেই কথা তিনি টের পাচ্ছেন। কি গুরুদ্বার, কি মসজিদ, কি মন্দির – যেখানেই যাচ্ছেন, জনতার ভিড় তাঁকে ঘিরে বলছে, ‘আপনাকেই চাই।’ বুধবার গুরুদ্বারে গিয়ে ভোট জয়ের জন্য আশীর্বাদ নেওয়ার পাশাপাশি শিখ সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় করেছিলেন মমতা। আর বৃহস্পতিবার ভবানীপুর এলাকার হিন্দিভাষীদের সঙ্গে জনসংযোগে নামলেন তিনি। সেখানেও সকলের একই কথা। কেউ বললেন, ”ম্যাডাম এত ভাল করছেন, বাংলা এগিয়ে যাচ্ছে। ম্যাডামের ভাল চাই।” কারও আবার বক্তব্য, ”উনি রেকর্ড ভোটে জিতবেন।” সকলের ভালবাসায় আপ্লুত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কতা ছিল, বৃহস্পতিবার ভবানীপুর লেডিজ ক্লাবে গিয়ে হিন্দিভাষী মানুষজনের সঙ্গে জনসংযোগ সারবেন মুখ্যমন্ত্রী তথা ভবানীপুরের তৃণমূল (TMC)প্রার্থী। কথা রেখে নির্দিষ্ট সময়েই তিনি পৌঁছে যান লেডিজ ক্লাবে। প্রথমে সকলের কথা শোনেন। খ্রিস্টান, গুজরাটি, জৈন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা সকলেই ভবানীপুরে মমতার অবদান নিয়ে বলেন। গুজরাটি সম্প্রদায়ের যশবীর বললেন, ”প্রথম ভোট দিয়েছিলাম আপনাকেই”। পাঞ্জাবি ভাষায় প্রীতপাল সিং নামে এক যুবক বলেন, ”কলকাতায় যে গুরুদ্বারের সমস্যা হয়েছিল, তা আপনি সঙ্গে সঙ্গে মিটিয়েছেন।” মাড়ওয়াড়ি সম্প্রদায়ের এক প্রতিনিধির কথায়, ”এত প্রেম, এত প্যর অন্য কোথাও নেই।”
এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রতিটি ভাষাই একটু একটু করে বলেন। ভবানীপুরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ”ভোট হোক না হোক, আমি গুরুদ্বারে যাই। মসজিদে যাই। গির্জায় যাই। আমি চেয়ে চেয়ে হালুয়া খাই। আমার সঙ্গে আপনাদের ভালবাসা হয়, অন্য কারও হয় না। আমার সঙ্গে যে অত্যাচার হয়েছে এবার ভোটে প্রত্যেক ভোট দিয়ে তার জবাব দিন, আশীর্বাদ করুন।” এরপর তাঁর বার্তা, ”সবাই ভোরে উঠে ভোট দেবেন, বৃষ্টি হলেও একটু ধৈর্য ধরে ভোট দিয়ে আশীর্বাদ করবেন।” এদিনের ভাষণে বিজেপি (BJP) বিরোধিতায়ও সরব হতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে। বললেন, ”নন্দীগ্রামকে পাকিস্তান বলছিল, এখন ভবানীপুরকেও পাকিস্তান বলবে। কিন্তু আমি হিন্দুস্তানকে পাকিস্তান হতে দেব না।” বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তিনি বললেন, ”আমি আহমেদাবাদে গিয়েও লড়ব।”
লেডিজ পার্ক থেকে বেরিয়ে তিনি ভবানীপুরের লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দিরে পুজো দিতে যান। ফুল-মালা দিয়ে পুজো দেওয়ার পর পুরোহিতদের আশীর্বাদ নেন মমতা। এরপর মন্দিরের প্রসাদ নিয়ে সমস্ত দর্শনার্থীর মধ্যে নিজে হাতে বিলি করেন। আর এভাবেই আবারও বোঝালেন, ভবানীপুরের তিনিই ‘ঘরের মেয়ে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.