Advertisement
Advertisement

Breaking News

Rajarhati Newtown

কার দখলে যাবে নিউটাউন? এক দশক পরেও ভোটে বড় ‘ফ্যাক্টর’ জমিহারারা

নিউটাউনে অনিচ্ছুক জমিদাতাদের ইস্যুও একটা ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে চলেছে।

WB Assembly Polls 2021: Who may get majority from Rajarhati Newtown will decided by land loosers | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:April 12, 2021 6:04 pm
  • Updated:June 13, 2022 3:50 pm  

কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: প্রচলিত কথাটা হল, লেখাপড়া করে যেই, গাড়িঘোড়া চড়ে সেই। অর্থাৎ যিনি মন দিয়ে অধ্যয়ন করেন তিনি জীবনে প্রতিষ্ঠিত হন। তাঁর বাড়ি, গাড়ি হয়। চলতি এই ধারণা নিউটাউনে এসে একটু মানে পালটে ফেলেছে বলে মানুষ মনে করেন। নিউটাউনের প্রচলিত কথাটি হল, আপনার বাড়ি হলে অন্যের গাড়ি হবে। আপনার বাড়ি তৈরির মালপত্রের জোগান দেবে সিন্ডিকেট। সেই লাভের টাকায় তার গাড়ি হবে। রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষের ধারণা, রাজারহাট-নিউটাউনের (Rajarhat Newtown) ভোটে সিন্ডিকেট একটি বড় ফ্যাক্টর। রাজনীতির মানুষজন অবশ্য বিষয়টিকে অতীব সংবেদনশীল মনে করে এড়িয়ে চলার অভ্যাস তৈরি করে ফেলেছেন ভোটের ময়দানে। তবে সিন্ডিকেট একা নয়। নিউটাউনে অনিচ্ছুক জমিদাতাদের ইস্যুও একটা ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে চলেছে বলে মানুষের ধারণা।

বিষয়টা এমন পর্যায় চলে গিয়েছে যে, বর্তমান জমি আন্দোলনের নেতা শেখ নিজামুদ্দিনকে একপ্রকার জোরাজুরি করে নির্বাচনে লড়াই করতে দাঁড় করিয়ে দিতে চাইছিলেন জমিহারা অনিচ্ছুকরা। কয়েকটি কারণে অবশ্য নিজামের মনোনয়ন বাতিল হয়ে গিয়েছে। তা না হলে ভোটের ময়দানে প্রতিপক্ষদের জোর টক্কর দিতেন বলে নিজাম মনে করেন। আন্দোলনকারীদের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, রাজারহাট-নিউটাউনের ২৭টি মৌজার মানুষই জমি হারিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশ জমিহারা ক্ষতিপূরণ নিতে অস্বীকার করেছেন। তাঁরা আন্দোলনের পথে চলার কথাই জানাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, গত তিন বছরে নিউটাউনে একাধিক বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে। হিডকো ভবন ঘিরে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে গত কয়েক বছরে। চিনার পার্কে জমিহারা অনিচ্ছুকদের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে কড়া পদক্ষেপ করতে হয়েছিল পুলিশকে।

Advertisement

[আরও পড়ুন : বাগুইআটিতে পরিত্যক্ত গাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড,ঘটনাস্থলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়]

রাজারহাট-নিউটাউন বিধানসভা কেন্দ্রে এবার তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী তাপস চট্টোপাধ্যায়। তিনি বিধাননগর পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র ছিলেন। বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছেন ভাস্কর রায়। সিপিএমের সপ্তর্ষি দেব দাঁড়িয়েছেন সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত প্রার্থী হয়ে। ক্ষমতার বাইরে থাকা বিজেপি জমি আন্দোলন নিয়ে তেমনভাবে নিজেদের অবস্থান এখনও স্পষ্ট করেনি। আর বাকি দুই দলের যা অবস্থা তাতে দুই দলের পক্ষ থেকেই আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলার উপায় নেই।

নিউটাউনে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছিল বাম আমলে। জোর করে, পেশিশক্তির কাছে পরাজিত করে মানুষকে জমি দিতে বাধ্য করেছিলেন ওই অঞ্চলের তৎকালীন দোর্দণ্ডপ্রতাপ সব বাম নেতারা। তাঁরা জমি ছিনিয়ে নিয়েছিলেন বলে বহু মানুষ অভিযোগ জানিয়ে থাকেন এবং পৈতৃক জমি হারানোর ক্ষোভ এখনও দগদগে তাঁদের মনে। সেই সময় বাম নেতা তথা রাজ্যের যে মন্ত্রীর নাম সবথেকে বেশি উঠেছিল তিন হলেন গৌতম দেব। তাঁর ছেলে সপ্তর্ষি দেব এবার নিউটাউনের প্রার্থী। আর সে সময়ের আর এক তাবড় সিপিএম নেতা তাপস চট্টোপাধ্যায় এখন তৃণমূলে। তিনিও এবার নিউটাউনে প্রার্থী।

[আরও পড়ুন : মোদির ‘দিদি, ও দিদি’ ডাকে শহরে বাড়ছে ‘ইভটিজিং’, থানায় দায়ের অভিযোগ]

বামেরা চলে যাওয়ার পর নিউটাউনের প্রতিটি মৌজায় বর্তমান সরকারও জমি নিয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। নিজামের বক্তব্য, “উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ না পেয়ে আন্দোলনের রাস্তাতেই রয়েছেন জমিহারারা।” অনিচ্ছুকদের বক্তব্য, গোপালপুর, চকপাচুরিয়া, পাথরঘাটা, নবাবপুর ইত্যাদি এলাকায় জমি নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে দিনের পর দিন লাগাতার ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের। কয়েক হাজার পরিবার ক্ষতিপূরণ নিতে অস্বীকার করেছেন। সেই প্রভাব ভোটবাক্সে পড়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। ফলে সিন্ডিকেট শুধু নয়, জমির লড়াইয়ে নামা মানুষদেরও নিজেদের দিকে ফিরিয়ে আনা বড় চ্যালেঞ্জ প্রার্থীদের কাছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement