সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু মেট্রোর সুড়ঙ্গ খুঁড়তে টানেল বোরিং মেশিনের কম্পনেই নয়, বউবাজারের বাড়ি ভেঙে যাওয়ার নেপথ্যে আরও একটি কারণ খুঁজে বের করলেন ইঞ্জিনিয়াররা। সুড়ঙ্গ ভিতরে জল জমে যাওয়াই বিপত্তির মূল কারণ বলে মনে করছেন তাঁরা। তার জেরে মাটির উপর অতিরিক্ত জলের চাপ সামলাতে না পেরে তা আলগা হয়েই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বাড়িগুলি। কিন্তু কীভাবে সুড়ঙ্গে জল
ঢুকে গেল, সেই প্রশ্নের উত্তর নেই মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছেও।
রবিবার দুপুরে দুর্গা প্রিটোরিয়া স্ট্রিটের ৪টি বাড়ি ভেঙে পড়ার পর সেখানে
পরিদর্শনে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। জটিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকাতেই কার্যত ‘মিনি কন্ট্রোল রুম’ খোলা হয়েছে। নামানো হয়েছে কলকাতা পুলিশের মোবাইল পোস্ট ভ্যান।৪টি বাড়ি ভেঙে পড়া, আরও কয়েকটি বাড়ির ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা, কোনও বাড়ির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখে আর ঝুঁকি নেয়নি পুরসভা। সঙ্গে সঙ্গেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী নামিয়ে এলাকা খালি করে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ
সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলেছে কাজ। অন্তত ২৫০ জনকে ইতিমধ্যেই নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। আর সেসবই নিয়ন্ত্রিত হয়েছে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের মোবাইল পোস্ট ভ্যান থেকে। এর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে হেড কোয়ার্টারের। তাই সবটাই সেখান থেকে নজরে রাখছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানিয়েছেন, ওই এলাকায় অন্তত ১৮টি বাড়ি এমন বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে।সন্ধের পর বৃষ্টি নামায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হতে পারে বলে মনে করছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। সেক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছেন তাঁরা।
ঘটনার পরপরই মেয়র মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সূত্রের খবর, নিজেদের কাজের জন্যই যে এমন বিপর্যয়, তা তাঁরা মেনে নিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভেঙে পড়া বাড়ি তাঁরাই দায়িত্ব নিয়ে তৈরি করে দেবেন। তবে তার জন্য সময় লাগবে। মেট্রো রেল সূত্রে খবর, ছ মাস থেকে এক বছর সময় লাগবে বাড়িগুলি নতুন করে তৈরি করতে। সেই সময়ের জন্য বাসিন্দাদের থাকার ব্যবস্থা করবেন তাঁরাই। স্থানীয় কোনও ফ্ল্যাট বা বাড়ি ভাড়া করে তাঁদের রাখা হবে।
সন্ধের পর এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়াররা। তাঁদেরই মধ্যে একজনের ব্যাখ্যা, ‘ঘটনার দায় একা কারও উপর চাপানো যাবে না। কলকাতা শহরের মাটির চরিত্র এমনই, যেখানে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময়েই সতর্ক না হলে এধরনের বিপদ ঘটতেই পারে। তবে ফাটল দেখে মনে হচ্ছে, এটা স্থায়ী। আর বাড়বে না। বৃষ্টি না হলে বড় বিপদের আশঙ্কা নেই।’ তবে এই সমস্যার চটজলদি কোনও সমাধান আছে
বলেও মনে করছেন না বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়াররা। ফলে এই মুহূর্তে বউবাজারের ঘটনা পুরসভার মূল মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.