অনির্বাণ বিশ্বাস: ম্যারাথন জেরার পর ছেড়ে দেওয়া হল অ্যাপোলোর প্রাক্তন সিইও রূপালি বসুকে। সঞ্জয় রায় মৃত্যুকাণ্ডের তদন্তের স্বার্থে মঙ্গলবার দুপুর বারোটার পর তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল৷ তাঁর সঙ্গে অ্যাপোলোর বর্তমান সিইও রানা দাশগুপ্ত হাসপাতালের আরও এক চিকিৎসককে তলব করা হয়েছিল৷ এদিন দুপুরের দিকে রাণা দাশগুপ্ত থানায় আসেন। কিন্তু সন্ধে নাগাদ ফুলবাগান থানায় হাজির হন রূপালি বসু।
জানা গিয়েছে, চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি, টেস্ট না করেও অতিরিক্ত অর্থ দাবির মতো একাধিক প্রশ্নের তালিকা তৈরি করেছিল পুলিশ৷ সেই সব প্রশ্নগুলিই করা হয় রূপালি বসুকে৷ তবে শেষপর্যন্ত তাঁর কথায় কোনও অসঙ্গতি না পাওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জেরায় রূপালি বসু পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ঘটনার সময় তিনি দেশে ছিলেন না। অন্যদিকে, জেরা শেষে পুলিশ জানায়, তদন্তে কোনও অসহযোগিতা করেননি রূপালি বসু। প্রয়োজনে অন্য কোনওদিন ডাকার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। সূত্রের খবর, বিলে প্যাকেজ ব্যবস্থায় অসঙ্গতি কেন দেখিয়েছে অ্যাপোলো সেই বিষয়েই মূলত জিজ্ঞাসা করা হয় তাঁকে। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর্যন্ত চলে জেরা।
হুগলির ডানকুনির বাসিন্দা সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ ওঠে কলকাতার এই নামী হাসপাতালের বিরুদ্ধে৷ সঞ্জয়ের পরিবারের অভিযোগ ছিল, বাইক দুর্ঘটনায় আহত যুবককে সিটি স্ক্যানের নামে শুধুমাত্র অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় রোগীকে ‘ভেণ্টিলেশন’-এ দিয়েছিল অ্যাপোলো হাসপাতাল৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার বিল করেছিল প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা৷ এমনকী পরিবার সঞ্জয়কে এসএসকেএম-এ স্থানান্তরিত করতে চাইলে অ্যাপোলো সাফ জানিয়ে দেয়, বিপুল অঙ্কের বিল পুরো না মেটালে রোগীকে ছাড়া হবে না৷ বিল নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে এসএসকেএমে নিয়ে যেতে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়৷ যার ফলে সরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় সঞ্জয়বাবুর৷ ঘটনার পর মৃত সঞ্জয়ের স্ত্রী রুবি রায় অ্যাপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে ফুলবাগান থানায় চিকিৎসায় গাফিলতি, জোর করে টাকা আদায়-সহ একাধিক অভিযোগ দায়ের করেন। তারপর গত ২ মার্চ হাসপাতালের সিইও পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন রূপালি বসু৷
অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ফুলবাগান থানার পুলিশ৷ হাসপাতালের কাছ থেকে চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত নথি, কোন টেস্টে কত খরচ, রোগীর কেস হিস্ট্রি চেয়ে পাঠানো হয়। সেসব নিয়েই প্রশ্ন করা হয়েছিল রূপালি বসুকে।
ছবি-প্রতিবেদক
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.