ফাইল ফটো
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (CAA) প্রতিবাদে এবার বড়সড় দাবি করে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার রানি রাসমনিতে তৃণমূলের সমাবেশ থেকে তিনি দাবি তুললেন, ”দেশে গণভোট হোক। আপনি করবেন না, রাষ্ট্রসংঘের তত্বাবধানে হবে গণভোট। প্রয়োজনে একটা কমিটি তৈরি হোক। আমরা কেউ থাকব না, থাকবেন মানবাধিকার কর্মী ও বিশেষজ্ঞরা। ক্ষমতা থাকলে গণভোটে লড়ুন।” মোদি-শাহর নাম না করে পরোক্ষে তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ”বলুন, হেরে গেলে পদত্যাগ করবেন?”
এই দাবির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ বিষয়কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাষ্ট্রসংঘের দরবারে নিয়ে যেতে চাইছেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একটা বড় অংশ। আসলে, এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের নেপথ্যে একটা বড় ভূমিকা রয়েছে ১৯৫০ সালে নেহরু-লিয়াকত চুক্তির। যে চুক্তি অনুযায়ী, ভারত-পাকিস্তান ভাগাভাগির পর নিজ নিজ দেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়া এবং নিরাপদে এক স্থান থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। ফলে দু’দেশেই গঠিত হয় সংখ্যালঘু কমিশন। এই লিয়াকত চুক্তি মানতে না পেরে নেহরুর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।
বিলটি পাশ করানোর সময়ে যুক্তি হিসেবে সংসদে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ বলেছিলেন, ”নেহরু চুক্তি ভারত মেনে চললেও, পাকিস্তান তা রক্ষা করতে ব্যর্থ। সেদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার তখনও হয়েছিল, আজও হচ্ছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে এই বিষয়টিও সংশোধন করা হবে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি এই চুক্তির পালটা হিসেবেই রাষ্ট্রসংঘের অধীনে গণভোটের দাবি তুললেন? সেই প্রশ্নও ঘোরাফেরা করছে সংশ্লিষ্ট মহলে। সমালোচকরা এই প্রশ্নও তুলছেন যে দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার একেবারে রাষ্ট্রসংঘের দরবারে নিয়ে যাওয়ার যে আহ্বান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন, সেটা কতটা যুক্তিসঙ্গত। তবে CAA বিরোধিতা করতে গিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো যে খুব বড় একটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলকে, তা অস্বীকার করতে পারছেন না কেউই।
যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দাবির পরপরই তার সমালোচনায় নেমেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি টুইট করে তৃণমূল নেত্রীকে এই দাবি প্রত্যাহারের কথা বলেছেন।
.@MamataOfficial. I appeal CM Mamata Bannerjee to please withdraw her reported statement “Let there be an impartial organisation like United Nations or National Human Rights Commission hold a referendum to see how many people are in favour or against Citizenship (Amendment) Act”,
— Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) December 19, 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.