ফাইল ফোটো
সুদীপ রায়চৌধুরি: কবে শেষ হবে বহু প্রতীক্ষিত রাম মন্দিরের কাজ? কবে দরজা খুলে শুরু হবে রামলালার পুজো? সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর প্রশ্ন এখন একটাই। অযোধ্যায় রাম মন্দির গঠন আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হিসেব অনুযায়ী মন্দির তৈরি হতে সময় লাগবে ন্যূনতম চার বছর। অর্থাৎ ২০২৪, পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের বছর। সূত্রের খবর, ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৪-এর ১৭ এপ্রিল রামনবমী। এই দিন রামলালার জন্মমহোৎসব ধুমধাম করে পালনে এখন থেকে কোমর বেঁধেছে রাম জন্মভূমি ন্যাস কর্তৃপক্ষ।
শনিবার আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, তিন মাসের মধ্যে অযোধ্যায় রাম মন্দির গড়ার কাজ শুরু করার জন্য একটি ট্রাস্ট গড়তে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। ওই ট্রাস্টের হাতে তুলে দিতে হবে বিতর্কিত জমির মালিকানা। পাশাপাশি খুঁজে বের করতে হবে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য পাঁচ একর জমি। সব মিলিয়ে কাজ শুরু হতে হতে ডিসেম্বর মাস পেরিয়ে যাবে বলেই সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা। তারপর চার বছর, মানে ২০২৪-এর আগে মন্দির গড়ার কাজ শেষ হবে না।
রাম জন্মভূমি ন্যাসের এক সূত্র জানাচ্ছে, মন্দির তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় শিলার অধিকাংশই তৈরি আছে। তৈরি আছে নকশাও। প্রশাসনিক পর্ব শেষ হলেই ৬৭ একর জমির উপর মন্দির তৈরির কাজ শুরু হতে সময় লাগবে না। আরও জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ে মন্দির নির্মাণ শেষ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কয়েক লক্ষ করসেবক তৈরি রয়েছেন। ফলে নির্ধারিত সময়ের থেকে দেরি হওয়ার কোনও কারণই নেই।
এপ্রসঙ্গে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ডা. শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘এর আগে সোমনাথ মন্দিরও এই ভাবেই তৈরি হয়েছিল। এবার রাম মন্দিরও হবে। ন্যূনতম চার বছর লাগবে কাজ শেষ হতে। ২০২৪-এর প্রথম দিকে মন্দির চালু হয়ে যাবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’ তাঁর কথায়, ‘ভারতবর্ষ বিবিধ ধর্ম ও বহুমতের দেশ। তাই এই রায়ে কারও জয় বা কারও পরাজয় হয়নি। ভারতবর্ষের বিবিধ মতের স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হল। এই রায় তাই কারও মেনে নিতে আপত্তি হওয়া উচিত নয়।’
শচীনবাবু আরও বলছেন, “শ্রীরামচন্দ্র ভারতবর্ষের রাষ্ট্রীয় মহাপুরুষ। ‘মর্যাদা পুরুষোত্তম’। ভারতবর্ষের এক ও অদ্বিতীয় রাষ্ট্রনায়ক। ৪৯১ বছর লড়াইয়ের পর সেই সত্যই প্রতিষ্ঠিত হল। আজকের রায়ে আনন্দ যেমন করা উচিত, তেমনই ধৈর্য ও মর্যাদা বজায় রাখা উচিত। পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা উচিত।”
এদিকে অযোধ্যার রায়ের পর মথুরা, বারাণসীর পাশাপাশি এরাজ্যের আদিনা মসজিদ নিয়েও একই দাবি তুলেছে হিন্দু সংহতি। সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের এই যুগান্তকারী রায়কে স্বাগত জানাই। এই জয় ভারতের সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার যুদ্ধে একটি ঐতিহাসিক মাইল ফলক। লড়াই আরও বাকি। তাই আত্মসন্তুষ্টির কোনও অবকাশ নেই। বিদেশি আক্রমণকারীদের চিহ্ন মুছে ফেলে যেভাবে রাম জন্মভূমিকে মুক্ত করা হল, সেইভাবেই মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি, বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির এবং অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের আদিনাথ মন্দির (আদিনা মসজিদ)-এর মুক্তি চাই।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.