সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অশরীরীদের অস্তিত্ব পঞ্চেন্দ্রিয় দিয়ে টের না পেলেও, তাদের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন ধরে যন্ত্রপাতি দিয়ে অর্থাৎ বিজ্ঞান নির্ভরতার পথে এগিয়ে সেই প্রমাণ পেয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন এক যুবতী। তাও আবার বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শোয়ের মঞ্চে। আর এভাবে ‘ভূত’-এর অস্তিত্ব প্রমাণ করে আইনি জটে পড়লেন অনুষ্ঠানের আয়োজকরা। এমন এক মঞ্চে অবৈজ্ঞানিকভাবে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে, এই অভিযোগে সোজা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজ্ঞান মঞ্চ। এর বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে একটি বিবৃতিও জারি করা হয়েছে।
গত শনিবার রাত সাড়ে ন’টায় জি বাংলায় সম্প্রচারিত বহু জনপ্রিয় শো ‘দাদাগিরি আনলিমিটেড (সিজন ৮)’ – এই অনুষ্ঠানের এক প্রতিযোগী পেশায় প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটর। তিনি অনেকদিন ধরেই এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। যুবতী দাদাগিরির মঞ্চে দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন, ৬ জনের একটি দল গা-ছমছমে পরিবেশে গিয়ে অশরীরীদের অস্তিত্ব খোঁজে। সঙ্গে থাকে একরাশ যন্ত্রপাতি। অর্থাৎ বিজ্ঞানের আশীর্বাদকে সঙ্গী করেই তাঁদের এই সন্ধান। এ নিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি অভিজ্ঞতার কথাও ভাগ করে নেন বাকিদের সঙ্গে। এমন এক বিষয়ে উৎসাহিত বোধ করে সঞ্চালক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও নিজের এক রোমহর্ষক অভিজ্ঞতার কথা বলেন। এভাবে অনুষ্ঠানের অনেকটা অংশ বেশ একটা রহস্যজনক পরিবেশ তৈরি হয়। দর্শক, শ্রোতাদের অনেকেই এটি উপভোগ করেছেন। অনেকে আবার করেননি।
কিন্তু এমন একটি জনপ্রিয় অনুষ্ঠান থেকে এভাবে অলৌকিক বিষয়কে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার চেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। তাঁদের মতে, এই কাজ অবৈজ্ঞানিক এবং সংবিধান বিরোধী। বিজ্ঞান মঞ্চের এক সদস্য জানিয়েছেন, ভারতীয় সংবিধানের ৫১ এ এইচ ধারা লঙ্ঘন করেছে দাদাগিরির ওই প্রতিযোগীর ভূমিকা। ৫১ এ এইচ ধারা দেশবাসীর মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা ও যুক্তিবোধ তৈরির কথা বলে। আর অনুষ্ঠানে ঠিক তার বিপরীত কাজ হয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা। তাঁদের প্রতিবাদ এর বিরুদ্ধেই।
একটি বিবৃতি জারি করে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ নিজেদের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, অনু্ষ্ঠানটি সম্প্রচারের আগে থেকেই এর বিরোধিতা করে আইনি মামলা দায়ের করেছেন হাই কোর্টে। এনিয়ে অবশ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে যন্ত্রপাতির সাহায্যে ‘ভূত’দের অস্তিত্ব প্রমাণ বনাম বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে অস্তিত্বহীনতার প্রমাণের লড়াই এবার পৌঁছে গেল আদালতের দোরগোড়ায়। ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ নির্ধারিত হবে সেখানেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.