গোবিন্দ রায়: টেট মামলার শুনানিতে বিচারপতি এবং আইনজীবীদের বাকবিতণ্ডা ঘিরে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হল কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) এজলাসে। যা কার্যত নজিরবিহীন। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ছিল এই মামলার শুনানি। বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) মেয়ে সুকন্যাকে টেট এবং তাঁর চাকরির সমস্ত নথিপত্র পেশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। সেইমতো সুকন্যা এজলাসে প্রবেশ করতেই চাপা উত্তেজনাকর পরিবেশ তৈরি হয়। এরপর তা আইনজীবী বনাম বিচারপতির বাকযুদ্ধে পরিণত হয়। শেষমেষ সুকন্যাকে দেওয়া নির্দেশ প্রত্যাহার করেন বিচারপতি।
দুপুর সোয়া ৩ টের কিছু পরে এজলাসে আসেন বিচারপতি। সুকন্যা মণ্ডলের মামলা ঘিরে প্রচুর ভিড় জমে। সুকন্যা প্রবেশ করতেই আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় গেয়ে ওঠেন – ‘তুমি আসবে বলেই…’। বিচারপতি সওয়াল-জবাব রেকর্ড করার অনুমতি দেন। বুধবারের অতিরিক্ত হলফনামা এদিন গ্রহণ করেননি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। টেট মামলায় সুকন্যা-সহ ৬ জনের হাজিরার নির্দেশ এবং টেট সার্টিফিকেট, নিয়োগপত্র পেশ করার নির্দেশ প্রত্যাহার করেন তিনি। এরপর বলেন, ”আমার শরীর ভাল না। আসতাম না। কিন্তু না আসলে অনেকে ভাবত, আমি ভয় পেয়ে পালিয়ে গেছি। তাই আসলাম।”
এরপরই বিচারপতির সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ (Arunava Ghosh)। গোড়া থেকে কার্যত আক্রমণের ভঙ্গিতে ছিলেন তিনি। অরুণাভবাবুর বক্তব্য, ”আপনি আইন জানেন না। আপনাকে কী করে ডিল করতে হয় জানি। কোর্টকে বাজার করবেন না।” পালটা অরুণাভবাবুর উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ”আপনার বিরুদ্ধে রুল ইস্যু করে জেলে পাঠাব।”
সুকন্যা এবং আরও ৫ জনকে রাতারাতি তলব এবং সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করা নিয়ে শুধু আইনজীবীদের মধ্যেই নয়, ক্ষোভ উসকে উঠেছে দলের অন্দরেও। এ নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, শুধু একটা অতিরিক্ত হলফনামার ভিত্তিতে কাল থেকে একটা প্রচার চলছে। সে নিজের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও পেল না। তাঁর বিরুদ্ধে প্রচার হচ্ছিল, সেটার জবাব দেওয়ার সুযোগও তাঁকে দেওয়া হল না। আদালত ও বিচারপতিদের প্রতি পূর্ণ সম্মান দিয়েই বলছি, এটা কাম্য নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.