নব্যেন্দু হাজরা: দরজা, জানলা অধিকাংশ সময়ই থাকে বন্ধ। বাড়ির অন্দরে প্রবেশ বলতে শুধুই কাজের লোকের। বেশিরভাগ বাসিন্দাই জানেন না তাঁর উলটো দিকের ফ্ল্যাটে কে থাকেন। যিনি থাকেন তিনিই কি মালিক? নাকি আদতে তিনি ভাড়াটে? সবক্ষেত্রেই অন্ধকারে আবাসিকরা। একজনের নামে ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে দিব্যি আত্মীয় বা বন্ধু সেজে থেকে যাচ্ছেন বাকিরা। আর এটাই ভাবিয়ে তুলেছে অন্য আবাসিকদের। তাই ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও কঠোর কিছু নির্দেশ লাগু করার আবেদন করে কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিলেন কলকাতার একাধিক আবাসনের বাসিন্দারা।
নিউটাউনের (Newtown) একটি ঘটনাই এখন নাড়িয়ে দিয়েছে শহরের অভিজাত আবাসনের (Housing complex) ‘গৃহবন্দি’ বাসিন্দাদের। যেভাবে অন্যের নামে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে সাপুরজিতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন পাঞ্জাবের দুই গ্যাংস্টার, তা দেখে শিউরে উঠছেন তাঁরা। তাই বৃহস্পতিবার সকালেই নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসে একাধিক আবাসনের কমিটি। ফ্ল্যাট কিনে ভাড়া দেওয়ার নিয়ম-নীতি নিয়ে আলোচনা হয়।
বাইপাসের ধারে মুকুন্দপুর লাগোয়া দুই আবাসনের কমিটির তরফে কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে জানানোও হয়েছে বিষয়টি। তাতে অবেদন করা হয়েছে, আবাসনের ম্যানেজিং কমিটি ভাড়াটেদের বসবাসের আগে ও বসবাসকালীন এমন কিছু পদক্ষেপ করতে পারে, যাতে নিয়ম না মানলে বা সহযোগিতা না করলে কমিটি যেন সরকারি (প্রশাসনের) সহযোগিতা পায়।
আবাসিকদের দাবি, আবাসনে যে যার মতো থাকেন, কারও ব্যাপারে কারও আগ্রহ নেই। তাই এই সব দুষ্কৃতীরা খুব নিশ্চিন্ত থাকতে পারে। যে সব আবাসিক নিজেরা না থেকে ভাড়া দেন, তাঁরা কখনওই আবাসনের নিয়ম কানুনকে গুরুত্ব দেন না। ঠিকমতো এগ্রিমেন্ট পেপারও জমা করেন না। কে কে থাকবেন সেটাও জানান না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় একজনের নামে এগ্রিমেন্ট। কিন্তু থাকছে অন্য কেউ। ওই ভাড়াটেদের গতিবিধি, পেশা, বা কাজকর্ম সম্পর্কে কোনও ধারণাই থাকে না আবাসনের বাকিদের।
অভিযোগ, ভাড়ার ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়েই এগ্রিমেন্টের হার্ড কপিও জমা দেন না অনেকে। কেবল দূর থেকে একটি মেল করেই সব দায়িত্ব সারেন। পরবর্তী কালে আবাসনে আসার পর এই সমস্ত ভাড়াটেদের কাছ থেকে আবাসনের নিয়ম কানুন মানার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত অসহযোগিতা লক্ষ্য করা যায়।
এই সব অনিয়ম রুখতেই মুকুন্দপুরের এক আবাসনের বাসিন্দাদের আবেদন, আবাসনে ভাড়াটিয়া বসানোর ক্ষেত্রে যাতে পুলিশ কিছু কঠোর নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি এখন যে ফর্মটি বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার তথ্য থানায় জমা দিতে দেওয়া হয়, সেটিতে আরও তথ্য চাওয়ার ব্যবস্থার দাবি করা হয়েছে। মুকুন্দপুরের কাছে ওই আবাসন কমিটির সদস্য দিব্যেন্দু চৌধুরি বলেন, “এখানকার মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে পুলিশ কমিশনারকে একটি চিঠি দিয়েছি। যাতে পুলিশের তরফে কিছু নির্দেশ আমাদের কমিটিকে দেওয়া হয়, যা আমরা ইমপ্লিমেন্ট করতে পারি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.