অর্ণব আইচ: পূর্ণ লকডাউন (Lockdown) রাজ্যে। ফাঁকা, শুনশান রাস্তাঘাট। সেটাই সুযোগ। হাইস্পিডে গাড়ি চালিয়ে শহর দাপিয়ে বেড়াবে। এমনই পরিকল্পনা করেছিল জনা কয়েক যুবক, যুবতী। দুরন্ত গতিসম্পন্ন সেই গাড়ি আটকাতে গিয়ে বাইপাসে গুরুতর জখম হলেন এক ট্রাফিক কনস্টেবল। গার্ড রেল ভেঙে আহত এক সিভিক ভলান্টিয়ারও। লকডাউনের সকালে বেপরোয়া গাড়িটি কার্যত নাকানিচোবানি খাওয়াল কর্মরত ট্রাফিক পুলিশদের। আটক করা হয়েছে গাড়ির তিন সওয়ারিকে। হাসপাতালে ভরতি জখম পুলিশ কর্মীরা।
ঘড়িতে তখন সকাল সাড়ে ৭টা। পরমা আইল্যান্ড (Parama Island) থেকে একটি দামি গাড়িকে বেপরোয়া গতিতে আসতে দেখেন কর্মরত ট্রাফিক কনস্টেবলরা। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে উত্তর পঞ্চান্নগ্রামের ট্রাফিক গার্ডদের খবর পাঠিয়ে সতর্ক করে দেন। গাড়িটিকে থামানোর জন্য উত্তর পঞ্চান্নগ্রামে কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবলরা এলাকাটি গার্ড রেল দিয়ে ঘিরে দেন। দূর থেকে তা দেখতে পান গাড়ির সওয়ারিরা। তাঁরা গাড়ি পিছিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পুলিশের সঙ্গে রীতিমত স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে গাড়ি চালক বুঝতে পারেন, পিছিয়ে লাভ নেই। তখন সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি আরও গতিতে এগিয়ে এসে গার্ড রেল ভেঙে ট্রাফিক কনস্টেবল তন্ময় দাসের পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়।
কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পর ফের গার্ড রেলের প্রাচীর। ফলে গাড়ি ফের দ্রুতগতিতে পিছতে থাকে। এই সময়ে গাড়িটিকে আটকাতে পিছনের দিকে গার্ড রেল দিচ্ছিলেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। অতিরিক্ত গতি থাকায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁকেও ধাক্কা দেয়। এত কিছু করেও শেষ রক্ষা হয়নি। গাড়ি আটকে তিলজলা থানায় তা নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়ির সওয়ারি ছিলেন তিনজন – রণয় আগরওয়াল, জয় নামে দুই যুবক ও এক যুবতী। তাঁদের পরিকল্পনা ছিল, লকডাউনের শুনশান শহরে জয়রাইডে বেরবেন, ফাঁকা রাস্তায় দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে ঘুরবেন। কিন্তু সেই শখ পূরণের আগেই পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন তিনজন। লকডাউন এবং ট্রাফিকের নিয়ম ভাঙা ছাড়াও এঁদের বিরুদ্ধে আর কোন কোন ধারায় মামলা দায়ের হয়, সেটাই দেখার। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, যে করোনা সংক্রমণ রুখতে রাজ্যে সপ্তাহে দু’দিন করে পূর্ণ লকডাউন চলছে, তার সুযোগ নিয়ে এভাবে যারা বেরিয়ে পড়ছে, তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তো ওঠেই., নিজেদের সুরক্ষাও কি গুরুত্বপূর্ণ নয় এদের কাছে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.