সুব্রত বিশ্বাস: চলন্ত ট্রেনের শৌচালয়ের গর্ত দিয়ে সদ্যোজাত সন্তান পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে কয়েকবার। এবার ট্রেনের শৌচালয়ের ভিতর থেকে মিলল দুই অপরিণত সদ্যোজাতের দেহ। দু’জনকেই মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন রেলকর্মীরা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ সাঁতরাগাছি কারশেডে ফিরে যাওয়া ডাউন ইস্টকোস্ট এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরার শৌচালয়ে শিশু দু’টির দেহ দেখতে পান ক্যারেজ কর্মীরা। এরপর আরপিএফ দেহ দু’টি উদ্ধার করে জিআরপির হাতে তুলে দেয়।
একসঙ্গে দুই সদ্যোজাতর দেহ এভাবে পড়ে থাকায় চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে সাঁতরাগাছি রেল ইয়ার্ড অঞ্চলে। রেলের চিকিৎসক এসে দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহ দু’টি অপরিণত শিশুর বলে মনে করেছে পুলিশ। কারণ, দেহের সঙ্গে নাড়িভুঁড়ির একাংশও পড়ে ছিল শৌচালয়ে। মৃত শিশুদের দেহ কিভাবে ইস্টকোস্টের শৌচালয়ে এল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কোনও অন্তঃসত্ত্বা ট্রেনে যাত্রা করছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এছাড়া গর্ভের অপরিণত যমজ সন্তান মৃত বুঝতে পেরে মা তা ফেলে চলে যেতে পারেন বলেও আশঙ্কা। বাইরে থেকে দেহ এনে ট্রেনের শৌচালয়ে ফেলা হতে পারে, এই বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে সেদিকে লক্ষ্য রেখে তদন্তের গতি বাড়ানো হচ্ছে। ডাউন ইস্টকোস্ট এক্সপ্রেস সন্ধ্যের সময় হাওড়া পৌঁছায়। ফলে দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে কেউ মৃত শিশুদের দেহ ফেলতে পারে। তবে প্রথম বিষয়টির উপরই জোর দিচ্ছে পুলিশ।
পুলিশের কথায়, শিশুর দেহ বয়ে আনলে ব্যাগ বা ওই জাতীয় কিছু থাকতো শৌচালয়ের মধ্যে। কিন্তু দেহের আশপাশে তেমন কোনও কিছুই পাওয়া যায়নি। ফলে এই সন্দেহ জোরাল হচ্ছে না বলেই তাঁদের একাংশের মত। তবে ট্রেনের শৌচালয়গুলি অরক্ষিত বলে বরাবারই অভিযোগ উঠেছে। বিশেষত অসংরক্ষিত কামরার শৌচালয়গুলি। সেখানে বুকিংহীন পণ্য থেকে নানা ধরনের পাচার সামগ্রী, এমনকী বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রও রাখা হয় বলে অভিযোগ। স্ক্রু ড্রাইভার ব্যবহার করে দেওয়ালের প্লাই খুলে সেখানে ভরে দেওয়া হয় এইসব বেআইনি বলে জানা গিয়েছে। এদিন শিশুর দেহ উদ্ধার ঘিরে আবারও প্রমাণ হল, ট্রেনের শৌচালয়গুলি কতটা অরক্ষিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.