সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি করোনা (Corona) রোগী। তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য চাই প্লাজমা। কিন্তু এমন কঠিন পরিস্থিতিতে যেখানে হাসপাতালের বেড পাওয়া প্রায় দায় হয়ে উঠেছে, প্লাজমা কোথা থেকে জোগাড় হবে! অগত্যা কোনও উপায় না দেখে একপ্রকার বাধ্য হয়েই প্লাজমার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন করেন রোগীর আত্মীয়। আর সেই পোস্ট কলকাতা পুলিশের চোখে পড়তেই বিন্দুমাত্র দেরী না করে সাহায্যের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁরা।
কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) অনেক কর্মীই এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন, আবার কাউকে বা মহামারীর কবলে পরে প্রাণ দিতে হয়েছে। যাঁরা সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদের মধ্য থেকেই ওই দুই পুলিশকর্মী প্লাজমা দান করলেন। কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘পুলিশ সবরকমভাবে সাধারণ মানুষের পাশে আছে। এটা ঠিক যে আমাদের কর্মীরা অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তবে মানুষের সাহায্যে আমরা রয়েছি।’
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, সোশ্যাল মিডিয়া মারফৎ সোমবার সন্ধেয় আমাদের একজন জানান, তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় করোনায় আক্রান্ত হয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সংকটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন এবং অতি সত্ত্বর প্লাজমা থেরাপির প্রয়োজন। এই আবেদন পুলিশের একাংশের নজরে আসতে অনেকেই রাজি হয়ে যান। তাঁদের মধ্যে দু’জন, কনস্টেবল ভাস্কর বেরা এবং পুলিশ ড্রাইভার পাপ্পু কুমার সিং মঙ্গলবার তড়িঘড়ি প্লাজমা দানের জন্য পৌঁছে যান ওই বেসরকারি হাসপাতালে।
গোটা দেশ এখন এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলছে। আতঙ্কের নাম করোনা। COVID-19 মোকাবিলায় যেভাবে চিকিৎসকদের পাশাপাশি পুলিশেরাও যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, তা সত্যিই সাধুবাদ জানানোর মতো। লকডাউন উত্তর পর্বে তিলোত্তমা কলকাতার রাজপথও এখন জনবহুল। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বেশি। কিন্তু এমন করোনা আবহে সেই লকডাউন পর্ব থেকেই অবিরাম কাজ করে চলেছেন কলকাতা পুলিশের কর্মীরা। সাদা উর্দিতে শহরজুড়ে মোতায়েন হাজারো পুলিশ। মুখে মাস্ক, হাতে স্যানিটাইজার। গোটা শহর যখন সচেতনতার চাদরে মুড়েছে তখন ওঁদের কিন্তু ছুটি নেই। কর্তব্যে অবিচল। কখনও কোনও রোগিকে হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছেন তো আবার কখনও বা কোনও সার্জেন্টকে দেখা গিয়েছে অভুক্ত বয়স্কের মুখে খাবার তুলে দিতে। দেশের স্বার্থে, দশের স্বার্থে উদয়াস্ত কর্তব্যে অবিচল থাকা সেই পুলিশ কর্মীরাই এবার এগিয়ে এলেন করোনা রোগীকে প্লাজমা দানের জন্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.