চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তৃণমূল ভবনে বৈঠক
কৃষ্ণকুমার দাস: বাংলার লড়াকু নেত্রী। বাংলার প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে একের পর এক জনমুখী প্রকল্প চালু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উদ্যোগে তৈরি ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, ‘কন্যাশ্রী’, ‘রূপশ্রী’র মতো একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়নে লেগেছে জোয়ার। বিশ্ব দরবারে বন্দিত তাঁর নারী ক্ষমতায়নের উদ্যোগ। এবার সেই বার্তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিচ্ছে তৃণমূল। আগামী ১ এপ্রিল থেকে ১৫ মে পর্যন্ত টানা দেড়মাস ধরে চলবে এই কর্মসূচি।
বুধবার মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তৃণমূল ভবনে একটি বৈঠক করা হয়। তাতে অংশ নেন তৃণমূলের ৩৫টি সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী, রাজ্য কমিটির শীর্ষ নেত্রীরা। ওই বৈঠকে একগুচ্ছ কর্মসূচির কথা জানান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ‘অঞ্চলে আঁচল’, ‘তোমার ঠিকানা উন্নয়নের নিশানা’, ‘রক্তবন্ধন’, ‘এসো হে বৈশাখ’ এবং ‘শঙ্খযাত্রা’ নামে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
‘অঞ্চলে আঁচল’ কর্মসূচি: ১ এপ্রিল-১৫ মে পর্যন্ত দেড়মাস ধরে চলবে এই কর্মসূচি। বাংলার গ্রামীণ ৩৪৫টি ব্লক, ১২৭টি পুরসভা এবং কলকাতা-সহ মোট এক হাজার সভা হবে। প্রতিটি ব্লক এবং পুরসভায় একটি করে সভা হবে। উত্তর কলকাতায় ৬০টি ওয়ার্ডে ৮টি এবং দক্ষিণ কলকাতার ৮৪টি ওয়ার্ডে ১২টি সভা হবে। আঁচল পেতে গোল করে বসে মহিলারা সভাগুলি করবেন।
‘তোমার ঠিকানা উন্নয়নের নিশানা’ কর্মসূচি: ‘দিদি মহিলাদের সাথে, মহিলাদের পাশে’ এই বার্তা দিতে লিফলেট ছাপিয়ে বুথে বুথে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রতিটি বুথে কমপক্ষে ২৫০টি বাড়িতে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের এই লিফলেট পৌঁছে দিতে হবে।
‘এসো হে বৈশাখ’ ও ‘শঙ্খযাত্রা’ কর্মসূচি: পয়লা বৈশাখে ‘এসো হে বৈশাখ’ কর্মসূচি তৃণমূলের। রাজ্য মহিলা কংগ্রেসের তরফে একটি মিছিল করা হবে। ওই মিছিলের নাম ‘শঙ্খযাত্রা’। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মহিলারা মিছিলে বাংলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরবেন। ওইদিন সকাল সাড়ে ৯টায় গিরিশ পার্ক থেকে মিছিল শুরু হবে। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে শেষ হবে মিছিল। মহিলারা শঙ্খও বাজিয়ে মিছিল করবেন।
‘রক্তবন্ধন’ কর্মসূচি: আগামী ১ জুলাই চিকিৎসক দিবসে ‘রক্তবন্ধন’ কর্মসূচি হবে। গোটা রাজ্যজুড়ে রক্তদান শিবির করে ২ হাজার ইউনিট রক্ত জোগাড় করা হবে।
২০১১ সালে বাংলায় রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই নারী ক্ষমতায়নে জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্কুলস্তর থেকেই রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প। কলেজেও তাঁদের পড়াশোনার খরচ সামাল দেয় এই যোজনা। ইতিমধ্যে ইউনেসকোর স্বীকৃতি পেয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রকল্প। উচ্চশিক্ষার জন্য রয়েছে ‘স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড’। আবার বাংলার প্রত্যন্ত এলাকায় স্রেফ দূরত্বের অজুহাতে স্কুলের গণ্ডি থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা কন্যা-কৈশোর যে আজ বিদ্যালয়মুখী, তার কৃতিত্বও মমতারই। সৌজন্যে তাঁর জনমুখী ‘সবুজ সাথী’। দু-চাকার সাইকেল সত্যিই জীবনের দিশাই বদলে দিয়েছে গ্রাম-গ্রামান্তরে এতকাল গুমরে থাকা অগণিত ছাত্রীর। এছাড়াও ‘রূপশ্রী’-সহ একাধিক প্রকল্প যাতে মহিলাদের সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া যায়। আবার ‘স্বাস্থ্যসাথী’র মতো প্রকল্পেও পরিবার প্রধান হিসেবে রাখা হয়েছে মহিলাদের নাম। ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ তো প্রান্তিক থেকে শহরে, সকল মহিলাকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে সাহায্য করেছে। এই সমস্ত সামাজিক কল্যাণ ও সমাজে মহিলাদের লড়াইয়ের ইতিহাস অক্সফোর্ডের কেলগ কলেজের প্রেক্ষাগৃহে তুলে ধরবেন মমতা। যা বিশ্ববন্দিত। সেই বার্তা রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে দেওয়াই মূল লক্ষ্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.