ছবি প্রতীকী
অর্ণব আইচ: গণেশ চতুর্থীর অনুষ্ঠানে গায়িকার কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা! না অন্য কোথাও নয়, আবারও খাস কলকাতা শহরের বুকে অভিনেত্রী হেনস্তার চাঞ্চল্যকর ঘটনার অভিযোগ মিলল।
গত বৃহস্পতিবার মুরারিপুকুরে গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে একটি স্থানীয় ক্লাব আয়োজিত অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন ওই গায়িকা। রাতের দিকে তিনি গান গাইতে ওঠেন। অভিযোগ, গান শেষ করে তিনি যখন গ্রিন রুমে বসেছিলেন তখন হঠাৎই সেখানে মত্ত অবস্থায় ঢুকে পড়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুরজিৎ সাহা ওরফে ভানু। গ্রিন রুমে এসে প্রথমে তার পাশে বসে ভানু। গায়িকা তাকে সরে বসতে বলেন। কিন্তু ভানু আরও কাছে চলে আসে। তারপর তাঁর বাবার শারীরিক খোঁজখবর নেয়। ওই গায়িকার বাবা বেশ কয়েক দিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। সেকথা আগে থেকেই জানত ভানু।
এবার হঠাৎই ওই গায়িকাকে তাঁর বাবার চিকিৎসার জন্য সাহায্য বাবদ ১০ লক্ষ টাকা দিতে চায়। কিন্তু আচমকা কেন এই সাহায্য? সে প্রশ্ন করতেই তাঁকে কুপ্রস্তাব দেয় ভানু। গ্রিনরুমে যাঁরা ছিলেন তাঁদের সেখান থেকে বার করে দেয় ভানু। গায়িকা তার প্রস্তাবে রাজি না হলে জোর জবরদস্তি শুরু করে সে। গ্রিনরুমের বাইরে থাকা সঙ্গীদের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিতে বলে। অভিযোগ, এরপর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলে, “কতদিন ধরে আশা করে আছি তুমি এবার আসবে। তোমাকে আমি এবার নিজের করে ছাড়ব। আমার চাহিদা মিটলে এখান থেকে বের হতে দেব।”
কিন্তু ভানুর কথামতো গ্রিন রুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করা হয়নি। এরপর চিৎকার শুরু করে দেন গায়িকা। ভানু মত্ত অবস্থায় থাকায় তাকে কোনও ক্রমে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে নিজেকে বাঁচিয়ে সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হন ওই গায়িকা। সেদিনই মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকেই এলাকা ছেড়ে চম্পট দিয়েছে অভিযুক্ত। তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত ওই যুবতী ও তাঁর পরিবার। তাঁর অভিযোগ, স্থানীয়দের অনেকেই সেদিন তাঁর উপর নির্যাতন হতে দেখেছিল। কিন্তু কেউ তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। এমনকী, আয়োজকরাও পাশে দাঁড়ায়নি।
গায়িকা যে ক্লাবের হয়ে অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলেন, সেখানে অনুষ্ঠানের পোস্টারে নাম রয়েছে স্থানীয় কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু ও রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। ওই যুবতীর আরও অভিযোগ, গত বছরও তার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল ভানু। কিন্তু বিশেষ পাত্তা দেননি তিনি। তবে তার মনে যে এই বাসনা ছিল, তা ভাবতেই পারছেন না গায়িকা। তাঁর বক্তব্য, বাবা অসুস্থ তাই চিকিৎসার জন্য অর্থ প্রয়োজন। তাই যেমন ভাবে পারি টাকা জোগাড় করার চেষ্টা করি। কিন্তু তা বলে বাবার চিকিৎসার জন্য টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কেউ এমনটা করতে পার, তা ভাবতেই পারছি না। ঘটনার জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এলাকাবাসীর বক্তব্য, এর আগে কিন্তু এমন ঘটনা ঘটেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.