ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্যে পুরভোট কবে, তা নিয়ে ১০ মার্চের পর সিদ্ধান্ত নেবে নবান্ন। তখনই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেবে রাজ্য। সেই চিঠি হাতে পেলেই নিয়মানুযায়ী, ৩৫ দিন পর পুরভোটের দিন ঘোষণা করবে কমিশন। সূত্রের খবর, রাজ্য চায় রমজান মাসের আগে হোক পুরভোট। সেই অনুযায়ী, ১০ মার্চের পর পুরভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
কলকাতা পুরসভায় তৃণমূলের কাউন্সিলর ১২১ জন। তাঁদের প্রত্যেককে নিয়েই রিপোর্ট জমা পড়েছে দলের কাছে। কারও নামে অভিযোগের ঝুড়ি। পাড়ায় কারও বেশ নাম-ডাক। জমা পড়া অভিযোগের ভিত্তি কতটা? দোষী প্রমাণে কি সত্যিই সাজা পাবেন? সেসব খতিয়ে দেখতেই তৈরি হল চারজনের স্ক্রিনিং কমিটি। রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পুর দলের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম ও যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে কমিটির দায়িত্বে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে প্রার্থী বদল, সঙ্গে ১৪৪-এর বাকি আসনগুলিতে দলীয় প্রার্থী চয়ন, পুরো কাজটাই করবেন এই চারজন।
ঠিক হয়েছে, এই চারজনের তৈরি কমিটি যে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেবে, তা জমা পড়বে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তাতে ওয়ার্ডপিছু কম করে তিনজনের নাম থাকবে। ঝাড়াই-বাছাই করা নামের তালিকা থেকে রিপোর্ট দেখে চূড়ান্ত নাম বাছাই করবেন মমতা নিজে। চলতি মাসের শেষেই সেই রিপোর্ট জমা পড়ে যাওয়ার কথা। কোন কাউন্সিলর গত পাঁচ বছরে কী কাজ করেছেন, ব্যক্তিগত স্তরে তাঁর স্বভাব কেমন, মানুষের সঙ্গে তাঁদের আচার-ব্যবহার কেমন সব খতিয়ে দেখে প্রাথমিক রিপোর্টটি তৈরি করেছিলেন প্রশান্ত কিশোরের টিম আই-প্যাক। একেবারে বুথস্তরে রিপোর্ট নিয়েছেন তিনি। কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলেছেন হয়তো এক মিনিট। আবার ওই কাউন্সিলর সম্পর্কে খোঁজ নিতে পাড়ার আনকোরা কোনও বুথস্তরের কর্মীর সঙ্গে কথা বলেছেন পনেরো মিনিট। তাতে সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতার একাধিক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে রিপোর্ট জমা পড়েছে। রিপোর্ট বিরুদ্ধে গিয়েছে উত্তর ও মধ্য কলকাতা মিলিয়ে আরও বেশ কিছু কাউন্সিলরের। কিন্তু প্রশ্ন হল, দলীয় কাউন্সিলরদের নামে অন্য একটি সংস্থা যা রিপোর্ট দিয়েছে, তা দলীয় স্তরে কতটা প্রভাব ফেলবে?
প্রশান্ত কিশোরের রিপোর্ট চাইছে, অভিযুক্ত সকলকে বাদ দিলেই দলের পক্ষে ভাল। তাঁদের কারও নামে নেতৃত্বকে অবজ্ঞা করার অভিযোগ রয়েছে। কারও নামে বারবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। নালিশ এসেছে স্থানীয় স্তর থেকেও। পাড়ায় ঔদ্ধত্যের বদনাম রয়েছে তাঁদের। এইসব অভিযোগই খতিয়ে দেখা হবে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি প্রার্থী হওয়ার জন্য নানাভাবে আবেদন আসছে। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল নামটি প্রথম দিকে রেখে আরও দু’-একজন দাবিদারের নামও তালিকায় রাখার কথা হয়েছে। দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে যদিও কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি।
যদিও এক রাজ্য নেতা বলেছেন, “কাউন্সিলরদের কাজের খতিয়ান দেখে, তাঁদের জনসংযোগ, মানুষের সঙ্গে মেলামেশা দেখে, দলীয় কর্মসূচি পালনের আগ্রহ দেখেই তাঁর সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.