অর্ণব আইচ: কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক গার্ডের এক অফিসার ও এক কর্মীর শরীরে করোনা সংক্রমণ। সহকর্মীদের এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক ছড়ালেও কর্তব্য থেকে পিছিয়ে আসেননি জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের পুলিশ কর্মীরা। মধ্য কলকাতার গিরিশ পার্ক আউটপোস্ট থেকেই শুরু হল জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের কাজ। করোনার জেরে এই আউটপোস্টই এখন ট্রাফিক গার্ডের অফিস।
এর আগেও শহরের কয়েকটি থানার আধিকারিক ও পুলিশকর্মীর শরীরে করোনা ধরা পড়েছে। কিন্তু তার জন্য থানাগুলিকে ‘কনটেনমেন্ট এরিয়া’র আওতায় ফেলা হয়নি। যেহেতু ট্রাফিক গার্ডটিকে ‘কনটেনমেন্ট এরিয়া’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে, তাই সাময়িকভাবে সরানো হল তার অফিস। কোনও ঝুঁকি না নিয়েই ট্রাফিক বিভাগ আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের বাড়িটি।
পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর কলকাতার জোড়াবাগান, বড়তলা, শ্যামবাজার ও তার আশপাশের অঞ্চলজুড়ে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। ওই এলাকার বহু বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত। বাদ যায়নি পুলিশও। জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের এক আধিকারিক ও এক পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জানা গিয়েছে, ট্রাফিক গার্ডের বারাকে থাকা এক পুলিশকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে হাওড়ার একটি কোয়ারান্টাইন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর করোনা ধরা পড়ে। তাঁর সংস্পর্শে আসা ওই গার্ডের এক আধিকারিকও অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে প্রথমে হোম কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হয়। তাঁর লালারস পরীক্ষা করার পর করোনা পজিটিভ হওয়ায় পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে।
পরপর একই ট্রাফিক গার্ডের দুই কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ায় পুলিশকর্মীদের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ড ও তার আশপাশে শোভাবাজার স্ট্রিট, রবীন্দ্র সরণি, বারোয়ারিতলা লেনের অংশও ‘কনটেনমেন্ট এরিয়া’ বলে ঘোষণা করা হয়। এলাকাটি পুলিশ সিল করে দেয়। ট্রাফিক গার্ড ও পুরো এলাকাটি স্যানিটাইজ করা হয়। আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পুরো বাড়িটি। তাই গোটা অফিসটিই আক্ষরিক অর্থে ‘তুলে নিয়ে’ আসা হয়েছে গিরিশ পার্কের মোড়ে। এখানে জোড়াবাগান আউটপোস্টের আওতায় রয়েছে গিরিশ পার্ক আউটপোস্ট। ট্রাফিক পুলিশের এক আধিকারিক জানান, যেহেতু জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের অফিসটি একটু ভিতরে, তাই গার্ডের অফিসার ও পুলিশকর্মীরা বছরের অন্যান্য সময়ও এই আউটপোস্টে এসে বসে কাজ করেন। তাই এখান থেকে কাজ করা সুবিধাজনকই হয়েছে তাঁদের পক্ষে। এখন প্রত্যেকদিন গড়ে ৬০ শতাংশ পুলিশকর্মী ও অফিসার গার্ডে আসছেন। তাঁদের প্রত্যেকেই গাড়ি বা বাইকে করে বাড়ি থেকে যাতায়াত করছেন। যাঁরা দূরে থাকেন, তাঁদের বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.