সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেখতে সুশ্রী ছিলেন না। তা নিয়ে নিত্য গঞ্জনা তো চলতই। তার উপর রোজগার করে আনার জন্য চাপ দিতেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। রবিবার রাতে বজবজের চড়িয়ালের শ্বশুড়বাড়ির থেকে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। মৃতার বাপের বাড়ির অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই তাঁদের মেয়েকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। মৃতার স্বামী বুদ্ধদেব পাঁজাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে শ্বশুরবাডির আরও একজনকে। যদিও ওই গৃহবধূর উপর অত্যাচারের অভিযোগ মানতে নারাজ তাঁর শ্বশুরবাড়ির প্রতিবেশীরা।
[চাকরি করতে চাপ স্বামীর, আত্মঘাতী গৃহবধূর সুইসাইড নোট ঘিরে চাঞ্চল্য]
শুধু সংসার নয়, চাকরি করতে হবে। শ্বশুরবাড়িতে লাগাতার মানসিক চাপ ও অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মঘা্তী হয়েছিলেন বালির পারমিতা বক্সি ও বাঁশদ্রোণীর অনন্যা সাঁই। বজবজের গৃহবধূ জয়ন্তী ঢালিরও কি একই পরিণতি হল? নাকি তাঁকে মেরেই ফেলল শ্বশুড়বাড়ির লোকেরা? ঘটনার তদন্তে নেমে এখন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
[বড়দিনে বেসামাল মহিলাদের সামলাতে রাস্তায় প্রমীলা বাহিনী]
দক্ষিণ ২৪ পরগনা বজবজের চড়িয়ালের বাসিন্দা বুদ্ধদেব পাঁজার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল জয়ন্তী ঢালির। কিন্তু, দাম্পত্য জীবন সুখের হয়নি। বাপের বাড়ির লোকেদের বক্তব্য, জয়ন্তীকে দেখতে সুশ্রী ছিল না। তাই রোজগার করে আনার তাঁর উপর লাগাতার চাপ দিত শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। চলত শারীরিক অত্যাচারও। এমনকী, সপ্তাহে পাঁচ দিন বাপের বাড়িতে থেকে টিউশনি করতে জয়ন্তীকে বাধ্য করা হয়েছিল। টিউশনি থেকে রোজগার করা টাকা কেড়ে নিত জয়ন্তীর স্বামী। পণের আদায় করার জন্যও চাপ দেওয়া হত। জয়ন্তীর বাড়ির লোকের দাবি, সম্প্রতি স্বামী বুদ্ধদেব পাঁজার সঙ্গে পুরীতে ঘুরতে গিয়েছিলেন জয়ন্তী। সেখানে গিয়ে স্বামীর বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্কে কথাও জানতে পারেন। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর তুমুল অশান্তিও হয়।
[বেসামাল হলেই বিপদ, বড়দিনে কলকাতা জুড়ে সক্রিয় লালবাজারের ‘ক্যামেরা চোখ’]
রবিবার রাতে চড়িয়াল শ্বশুড়বাড়ি থেকে জয়ন্তীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় তাঁকে খুন করার অভিযোগে স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত গৃহবধূর পরিবারের লোকেরা। তাঁদের অভিযোগ, আত্মহত্যা নয়, জয়ন্তীকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে ওই গৃহবধূর স্বামী বুদ্ধদেব পাঁজাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে আরও একজনকে। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। যদিও এই ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কোনও দোষ দেখছেন না পাড়া প্রতিবেশীরা। তাঁদের দাবি, জয়ন্তী আত্মহত্যাই করেছেন। এক প্রতিবেশীর কথায়, রাতে যদি কোনও গণ্ডগোল হত, তাহলে তাঁরা টের পেতেন। কিন্তু, তাহলে কীভাবে মারা গেলেন ওই গৃহবধূ? এটা আত্মহত্যা না খুন? উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।
[পর্দায় ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’, সিট নিয়ে মারপিটে জড়াল সলমন ফ্যানেরা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.