রিংকি দাস ভট্টাচার্য: নামেই বর্ষাকাল৷ কিন্তু এখনও সেভাবে বৃষ্টির মরশুমকে উপভোগ করতে পারেনি দক্ষিণবঙ্গবাসী৷ মাঝে মধ্যে মেঘলা আকাশ এবং দু-এক পশলা বৃষ্টির দেখা মিললেও, অনেকটা সময়ই রোদের তেজে নাজেহাল হতে হয়েছে দক্ষিণবঙ্গবাসীকে৷ এই পরিস্থিতিতে, মঙ্গলবার সকালে অন্ধকারাচ্ছন্ন আকাশে আশার আলো দেখল শহরবাসী৷ আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস সত্যি করে মঙ্গলবার সকাল থেকে শহরে শুরু হল বৃষ্টি৷ এবং আশার খবর হল, আগামী তিনদিন বজায় থাকবে এই অবস্থা৷ হাওয়া অফিস বলছে, কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা ও নদিয়া-সহ দক্ষিণবঙ্গের সাত জেলায় রয়েছে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা৷ একইভাবে উত্তরবঙ্গের চার জেলাতেও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার থেকে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গজুড়ে। যার কারণ, উত্তর বঙ্গোপসাগরের তৈরি হওয়া নিম্নচাপ। এর জেরে আগামী কয়েক দিন দফায় দফায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানিয়েছেন, উত্তর বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ লাগোয়া এলাকায় একটি নিম্নচাপ দানা বেঁধেছে। যার ফলে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর-দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া এবং হুগলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এবং কলকাতায় বুধবার পর্যন্ত মাঝারি মাপের বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। হালকা বৃষ্টি হতে পারে নদিয়া-মুর্শিদাবাদে। এই বিষয়ে মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নিম্নচাপের অবস্থানের উপর নির্ভর করবে বৃষ্টির পরিমাণ।” তবে ৮ আগস্ট পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে ভাল বৃষ্টি পাবে বলেই জানিয়েছেন সঞ্জীববাবু।
বস্তুত, শ্রাবণের মাঝামাঝি হয়ে গেলেও এখনও তেমন ভাবে বৃষ্টি নামেনি দক্ষিণবঙ্গে। কিছু দিন আগে ঘূর্ণাবর্তের জেরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তার প্রভাব খুব একটা পড়েনি। হাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে উত্তরের আলিপুরদুয়ারে যেখানে বৃষ্টির পরিমাণ ১,৫২৯.৮ মিমি। সেখানে দক্ষিণবঙ্গ পেয়েছে মাত্র ১৭৪.৯ মিমি। কলকাতার হাল আরও করুণ। জুলাইয়ে এই শহরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৫৯.৯ মিমি৷ এমন বৈপরীত্য কেন? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বর্ষা সক্রিয় থাকার জন্য নিয়মিত নিম্নচাপ প্রয়োজন। জুন-জুলাই মিলিয়ে বঙ্গোপসাগরে ও লাগোয়া পূর্ব ভারতে ৬টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সেগুলির সামর্থ্য বা অবস্থান, কোনওটাই দক্ষিণবঙ্গের জন্য অনুকূল হয়নি। মৌসুমি অক্ষরেখাও দীর্ঘ সময় হিমালয়ের পাদদেশে ঘাঁটি গেড়েছিল। যদিও আসন্ন নিম্নচাপে দক্ষিণবঙ্গের জন্য সুখবর বয়ে আনবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তাতে এ রাজ্যে বৃষ্টির ঘাটতি মিটবে কি না, তা অবশ্য এখনই বলতে পারছে না আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.