অর্ণব আইচ: প্রকাশ্যে থুতু ফেললে ছড়াতে পারে করোনা। তাই পোস্টার দিয়ে পুলিশ শহরবাসীকে সচেতন করে বলেছে, ‘প্রকাশ্যে থুতু ফেলবেন না।’ কিন্তু পুলিশের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, কেউ যদি প্রকাশ্যে থুতু ফেলেন কীভাবে আটকানো হবে? পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, থুতু বা পান-গুটখার পিক ফেললে এই রাজ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রীতিমতো আইন রয়েছে। এই আইনের ভিত্তিতে ২০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানাও হয়। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, করোনার আতঙ্ক থেকে শহরকে বাঁচাতেই এবার থেকে থুতু ফেলা সংক্রান্ত আইনটি কাজে লাগানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০০৩ সালে এই আইনটি তৈরি হয়। তার নাম ‘প্রিভেনশন অফ স্পিটিং ইন পাবলিক প্লেস অ্যাক্ট’। এই আইনের ভিত্তিতে কেউ যদি যে কোনও খোলা জায়গায় বা রাস্তার উপর থুতু ফেলেন, তাঁকে পুলিশ ধরে ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করতে পারে। প্রয়োজনে থানায় নিয়ে গিয়ে বসিয়ে রেখেও আদায় করা যেতে পারে জরিমানা। ২০০৩ সালে এই আইনটি প্রণয়ন হওয়ার পর থেকে পুলিশ প্রথমে ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। বেশিদিন কড়া হতে পারেনি পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, এই আইনটির ভিত্তিতে কাউকে ধরা খুব সহজ নয়। কারণ, যাঁরা এই ধরনের কাজ করবেন, তাঁদের উপর নজর রাখবে কে?
গুটখা বিক্রি হচ্ছেই। গুটখার ক্রেতার সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়। গুটখা যাঁরা মুখে নেন, তাঁরা থুতু বা পিক ফেলেনই। আবার যাঁদের পান অথবা জরদা খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে, তাঁরাও পিক ফেলেন। দেখা গিয়েছে, ওই শহরবাসীরা শহরের রাস্তায় থুতু ফেলেনই। এ ছাড়াও দেখা গিয়েছে, মধ্য কলকাতা-সহ শহরের বেশ কিছু বাণিজ্যিক বাড়ির দেওয়ালেও ফেলা হয় গুটখার পিক। এমনকী, হাওড়া ব্রিজের পিলারও যে পিকের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারও প্রমাণ মিলেছে। সাধারণভাবে কেউ প্রকাশে্য থুতু বা পিক ফেললে কেউ বাধাও দেন না। পুলিশও কিছু বলে না। বরং রাস্তায় ডিউটিরত কিছু পুলিশকর্মী ওই অভ্যাস রপ্ত করেছেন, এমনও দেখা গিয়েছে।
পুলিশকর্তাদের মতো, সম্প্রতি সেই অবস্থা পাল্টেছে। কারণ, শহরে ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক। রাজ্য সরকারও করোনা রোধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কলকাতা পুলিশ বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা দু’টি পোস্টারের সাহায্যে প্রচার করতে শুরু করেছে। তাতে লেখা আছে, করোনা ভাইরাস রোধে কী কী করণীয় ও কী কী করা যাবে না। সেখানেই প্রকাশ্যে থুতু ফেলতে নিষেধ করা হয়েছে। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শহরে করোনা রোধে এবার প্রিভেনশন অফ স্পিটিং ইন পাবলিক প্লেস অ্যাক্ট লাগু করায় কোনও সমস্যা বা বাধা নেই। বরং এই আইন চালু করে ধরপাকড় বা জরিমানা নেওয়া শুরু হলে যেমন করোনা ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা কম থাকবে, তেমনই শহরের সৌন্দর্য্যও বাড়বে। তাতে শহরবাসীরই সুবিধা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.