অভিরূপ দাস: বসবাসের জন্য ফ্ল্যাট কিনে সেখানে ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন আবাসিক। এদিকে ব্যবসার নানান যন্ত্রপাতির আওয়াজে নাকাল অবস্থা অন্যান্য বাসিন্দারা। কারও কারও রাতের ঘুম উড়েছে আওয়াজের চোটে। দিনের বেলাও কান পাতা দায় হয়েছে সেখানে। কলকাতা শহরে একের এর এক এমন অভিযোগে ক্ষুব্ধ মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
শুক্রবার এবিষয়ে পুরসভায় মেয়র জানিয়েছেন, কেউ যদি থাকার জন্য ফ্ল্যাট কিনে সেখানে ব্যবসা শুরু করেন তা বরদাস্ত করা হবে না। বিল্ডিং বিভাগের কাছে তাঁর নির্দেশ, ‘‘তদন্ত করুন। কোন ফ্ল্যাট থাকার জন্য কিনে সেখানে ব্যবসা হচ্ছে।’’মেয়রের বক্তব্য, যদি কোনও ফ্ল্যাটে কেউ ব্যবসা শুরু করেন তাহলে অন্যান্য আবাসিকদের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বা ছাড়পত্র লাগবে। জানা গিয়েছে, এদিন আবাসিক ফ্ল্যাটে কারখানার দৌরাত্ম্যে বিরক্ত হয়ে আতাউর রহমান নামে এক ব্যক্তি ফোন করেন মেয়রকে। নিচের ফ্ল্যাটের যন্ত্রপাতির আওয়াজে বিরক্ত আতাউর। নারকেল ডাঙা এলাকার এই বাসিন্দা জানিয়েছেন, “দুতলায় থাকি। নিচের ফ্ল্যাটের যন্ত্রপাতির আওয়াজে ঘুমোতে পারছি না। রাতভর পাঞ্চিং মেশিন চলে নিচের ফ্ল্যাটে।” এর পর মেয়র জানতে চান, ‘‘এই কারখানা কি আবাসিকরা আসার আগে ছিল? না পরে হয়েছে।”
জানা গিয়েছে, গুদাম করার নাম করে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন ওই আবাসিক। কিন্তু পরে কারখানা খুলে বসেছেন। সেখানেই চলছে ল্যামিনেশন, পাঞ্চিংয়ের কাজ। আতাউর অভিযোগ জানিয়েছিলেন থানাতে। লাভ হয়নি। অভিযোগ জানিয়ে কিছু বললেই ট্রেড লাইসেন্স দেখাচ্ছেন ওই ফ্ল্যাটের মালিক। পুর এলাকায় এখন ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া অনেক সহজ। সবক্ষেত্রে পরিদর্শন করেন না ইন্সপেক্টররা। আবেদনকারীকে শুধুমাত্র ‘সেল্ফ ডিক্লেরেশন’দিতে হয়। সেখানেই ব্যবসা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য লিখিত ভাবে জমা দিতে হয়। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, অতিরিক্ত সরলীকরণের জন্যেই কি ব্যবসা ফেঁদে বসছেন যে কেউ?
এনিয়ে মেয়র জানিয়েছেন, কলকাতা পুর এলাকায় এখন ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া কোনও বিষয়ই নয়। অনলাইনে আবেদন করলেই পাওয়া যায়। তবে সেই লাইসেন্স থাকলেই সমস্ত ব্যবসা করা যাবে তেমনটাও নয়। ৪৯টি ব্যবসা আবাসিক এলাকায় করা যায়। বিল্ডিং বিভাগের ডিজিকে মেয়র নির্দেশ দিয়েছেন, “কী ব্যবসা হচ্ছে দেখুন। যদি দেখেন তালিকাভুক্ত ব্যবসার বাইরে অন্য কিছু ব্যবসা হচ্ছে নোটিস দিন।” তিনি আরও বলেন, আবাসনে কেউ ব্যবসা করলে তাঁকে অন্যান্য আবাসিকদের ছাড়পত্র নিতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.