সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে বিজেপির চোরাস্রোতে নড়ে গিয়েছে শাসকদলের ভীত৷ একধাক্কায় দুই থেকে বেড়ে রাজ্যে ১৮টা আসন পেয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির৷ ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে যা রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে তৃণমূলের৷ এমন পরিস্থিতিতে দলকে রক্ষা করতে, সমস্ত দূরত্ব, বিবাহ মিটিয়ে নিতে শুরু করেছেন তৃণমূল নেতারা৷ আর সেই জন্যই দল থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সূত্রের খবর, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর কাছে দলের সংগঠনের কাজে স্বমহিমায় ফিরে আসার আরজি জানিয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী৷ তবে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তরফে কি বলা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনও স্পষ্ট তথ্য মেলেনি৷
[আরও পড়ুন: হাজিরার সময় অতিক্রান্ত, সিবিআইয়ের কাছে বাড়তি সময় চেয়ে আবেদন রাজীবের ]
জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলের দিকে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করেন ফিরহাদ হাকিম৷ তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন৷ বেহালা পূর্বের বিধায়ককে প্রস্তাব দেন, দলের দুর্দিনে স্বমহিমায় আবার ফিরে আসার৷ তাঁর সঙ্গে দেখা করার৷ তবে ফোনের উলটো দিক থেকে শোভন চট্টোপাধ্যায় কী উত্তর দিয়েছেন, সে বিষয় এখনও প্রকাশ্যে আসেনি৷ রাখঢাক না করেই ফোন করার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম৷ তিনি বলেন, ‘এরাজ্য থেকে বামেদের অপশাসনের অবসান করতে একটা সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একসঙ্গে লড়াই করেছিলাম৷ এবার রাজ্যে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে লড়তে চাই৷ আর সে জন্যই দলের সকল সদস্যদের সহায়তা প্রয়োজন৷ তাই শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ফিরে আসার প্রস্তাব দিয়েছি৷’ এমনকী, তৃণমূলের পুরনো ও বসে যাওয়া কর্মীদের রাগ ভুলে দলে ফিরে আসার আহ্বান জানান মেয়র৷
কেবল শহর কলকাতাই নয়, শাসকদলের নেতাদের একজোট হওয়ার চিত্র ধরা পড়েছে বীরভূমেও৷ এদিন সকালে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে যান তৃণমূল নেতা কাজল শেখ৷ দীর্ঘদিনের তিক্ততা মিটিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেন তিনি৷ সূত্রের খবর, বিজেপির উত্থানে বিপর্যস্ত তৃণমূলকে ঘুরে দাঁড় করানোর প্রতিজ্ঞা নেন বীরভূমের দুই নেতা৷ গোষ্ঠীকোন্দল মিটিয়ে কীভাবে দলকে চাঙ্গা করা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করেন তাঁরা৷
[ আরও পড়ুন: কমছে মেধার চর্চা, উচ্চমাধ্যমিকেও শহরকে টেক্কা জেলার পড়ুয়াদের ]
পুরনো কর্মীদের দলে ফেরানোর পাশাপাশি, এদিন ভাটপাড়ার ঘরছাড়া ৫০০ পরিবারকে নিয়ে নবান্নে স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করালেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী৷ খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে সোমবার নবান্নে গিয়ে নিরাপত্তা চাইলেন ঘরছাড়াদের সদস্যরা৷ নির্বাচনের মরশুমে বিজেপির অত্যাচারে তাঁরা ঘরছাড়া হয়েছেন বলে, অভিযোগ করেন শাসকদলের ওই কর্মীরা৷ সূত্রের খবর, ঘরছাড়াদের সঙ্গে বৈঠকের পরই তৎপর হয় নবান্ন৷ নবান্নের তরফে বারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ বলা হয়, দ্রুত দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে হবে৷ এবং এলাকায় মজুত সমস্ত অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.