কলহার মুখোপাধ্যায়: জোর শব্দে বোমা ফাটত। আর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অভিযোগ আসত পুলিশের কাছে। তারপর ব্যবস্থা নিতে দৌড়োদৌড়ি শুরু করত থানাগুলি। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যেত আসল অপরাধীর টিকিটিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গতানুগতিক এই পদ্ধতি এবার বাতিল করতে চলেছে থানাগুলি। সংবেদনশীল আবাসন ও বহুতলের নিচে এবং মূলত পাড়ার গলির মুখে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দাঁড় করিয়ে রাখা হবে, এমন সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে বিধাননগর কমিশনারেটের তরফে। আর এই পুলিশরা অবশ্যই থাকবেন সিভিল ড্রেসে।
পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিধাননগর পুলিশ। আবাসন এবং বহুতলের ম্যানেজিং কমিটিগুলিকে নিষিদ্ধ বাজি রোখার জন্য তৎপর হতে অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ। আবাসনের সেক্রেটারি বা প্রেসিডেন্টেদেরও ইতিমধ্যে ডেকে বলে দেওয়া হচ্ছে যে ওই আবাসনে বাজি সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ এলে কমিটির পদাধিকারীদের উপর তার দায়ভার এসে বর্তাবে। তাই বাজি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কালীপুজোর দিন কয়েক আগে থেকেই আবাসনগুলির বৈঠকে আলোচনা করতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। সঙ্গে পুজো উদ্যোক্তাদেরও বলা হচ্ছে, চাঁদা তুলতে যাওয়ার সময় তাঁরা যেন নিষিদ্ধ বাজি না পোড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন মানুষকে।
এ প্রসঙ্গে বিধাননগরের ডেপুটি কমিশনার (সদর) কুণাল আগরওয়াল বলেছেন, “নিষিদ্ধ বাজি আটকাতে বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে সমস্যায় না পড়েন তা দেখার জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করবে পুলিশ।” বিধাননগরে কোন কোন এলাকায় বাজি সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা বেশি এবং কোন এলাকায় অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে তা খতিয়ে দেখে একটি তালিকা তৈরি করেছে কমিশনারেট।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও অনুরূপ একটি তালিকা তৈরি করেছে। এই দুই তালিকা ধরে এলাকাভিত্তিক আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা করেছে বিধাননগর পুলিশ। সেই তালিকা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে বিধাননগরে বাজির সব থেকে বেশি উপদ্রব সল্টলেক (উত্তর) থানা এলাকায়। তালিকায় তারপর রয়েছে দক্ষিণ সল্টলেক থানাও। এছাড়া লেকটাউন, বাগুইআটি, নিউটাউন থানা এলাকার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বাজির দৌরাত্ম্য মাত্রাছাড়া চেহারা নেয়। এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে লেকটাউন থানার হনুমান মন্দির, শ্রীভূমি, বাঙুর ও জয়া সিনেমা সংলগ্ন এলাকা। বাগুইআটি থানার মধ্যে রয়েছে কেষ্টপুর, দমদম পার্ক, চিনার পার্ক ও নারায়ণপুর এলাকা। নিউটাউন থানা এলাকায় রয়েছে, সাপুরজি বাসস্ট্যান্ড, নিউটাউন বাসস্ট্যান্ড থাকদাঁড়ি সংলগ্ন এলাকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.