ছবি: ফাইল
সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: যাকে বলে একেবারে মেগা ইভেন্ট। পুরভোটের ঠিক আগে ফের বড়সড় প্রচার কর্মসূচির ঘোষণা হবে আজ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর হাত ধরে। নেতাজি ইন্ডোরের সেই ‘ইভেন্ট লঞ্চ’-এর তাকিয়ে আমজনতা থেকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ – সকলেই। কী এমন সেই কর্মসূচি, যেখানে দলের জনপ্রতিনিধি, নেতানেত্রীরা ঢুকতেই পারবেন বারকোড দেওয়া প্রবেশপত্র দেখানোর পর? এই প্রশ্ন কয়েকদিন ধরেই ঘোরাফেরা করছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে।
আসলে আসন্ন পুরভোট একুশের বিধানসভারই সেমিফাইনাল। তাই প্রস্তুতি পর্বে কোনওরকম খুঁত রাখতে চান না রাজ্যের শাসকদলের সুপ্রিমো। এমনিতেই গত লোকসভা ভোটে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় জনসমর্থন হারিয়েছে তৃণমূল। জনগণের মন বুঝে তা ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। দলের সর্বস্তরের নেতানেত্রীদের ঘরে ঘরে গিয়ে এই ক’বছরের তৃণমূলের জনমুখী প্রকল্পের কাজের সুফল বোঝানোর নির্দেশ দিয়েছেন নেত্রী। প্রয়োজনে নিজের এলাকায় পড়ে থেকে জনসংযোগের রাস্তা একেবারে মসৃণ করে নিতে হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতি আজ, সোমবার ভোটকে সামনে রেখে নতুন একটি কর্মসূচি ঘোষণা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এই কর্মসূচির মধ্যে দিয়েই দলের শীর্ষস্থানীয়দের উপর আরও খানিকটা দায়িত্ব চাপাবেন তিনি। আড়াই মাস ধরে দলের সমস্ত শীর্ষনেতাদের একেবারে ময়দানে নেমে কাজ করার নির্দেশ দিতে পারেন। নয়া কর্মসূচির নাম কী হবে, তা এখনও জানা যায়নি।তবে এটি যে তৃণমূলের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, তা এর আয়োজন দেখেই স্পষ্ট। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এই কর্মসূচি ঘোষণার আগে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে দলীয় বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক সেরে নেবেন দলনেত্রী। তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব-সহ আজ ইন্ডোরে থাকবেন অন্তত ১৪ হাজার কর্মী, সদস্য। প্রত্যেকের জন্য পৃথক পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাতে বারকোড লাগানো রয়েছে। এই পরিচয়পত্রটি ছাড়া শাসকদলের যত বড় নেতাই হোক না কেন, ইন্ডোরে আজ তাঁর ‘নো এন্ট্রি।’
আজকের ‘ইভেন্ট লঞ্চ’-এ আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে আবার জেলায় জেলায় তৃণমূল নেতৃত্বের অন্দরে খানিক গোল বেঁধেছে। যেমন, দক্ষিণ দিনাজপুরে। নেতাজি ইন্ডোরের হাইপ্রোফাইল বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য জেলা তৃণমূলের বিলি করা বারকোড লাগানো কার্ড হাতেই পেলেন না বালুরঘাট পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান-সহ অনান্য বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলাররা। গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে জেলা তৃণমূলের সর্বস্তরের প্রতিনিধিরা ডাক পেলেও, প্রাক্তন জনপ্রতিনিধিরা কেন বঞ্চিত, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। জেলার রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হয়েছেন তাঁরা। যেখানে সকলকে এক ছাদের তলায় এনে, একই লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়ে কাজে নামাতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো, সেখানে তার সূচনালগ্নেই প্রকট হচ্ছে জেলায় জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চেহারা!
এনিয়ে ক্ষোভও তৈরি হয়েছে বিস্তর। বালুরঘাট পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান রাজেন শীলের কথায়, “যাঁরা দু-একদিন আগে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিলেন, তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে। আমি আশা করেছিলাম, বৈঠকে শামিল হওয়ার ডাক পাব। কিন্তু দলের জেলা নেতৃত্বদের বিলি করা বারকোড দেওয়া কার্ড বা পরিচয়পত্র দেওয়া হল না আমাকে। কেন সেই বৈঠকে আমি ডাক পেলাম না, তা আমার দলের জেলা সভাপতি বলতে পারবেন।” দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষের জবাব, “হাজার খানেক কার্ড দেওয়া হয়েছে দলের সব স্তরের জনপ্রতিনিধি ও পদাধিকারীদের। বালুরঘাট পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান ও অন্যরা এই মূহূর্তে কোনও দায়িত্বে নেই বলেই তাঁরা সেই কার্ডের আওতায় আসেননি।”
ছবি: পিন্টু প্রধান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.