ছবি: প্রতীকী
স্টাফ রিপোর্টার: দুমদাম করে যা খুশি বলা, সংবাদ মাধ্যমে মুখ খুলে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলা চলবে না। শুধু তাই নয়, প্রকাশ্য সভায় কর্মীদের কাছে সস্তায় হাততালি পেতে দলের অন্য নেতার সম্পর্কেও কোনও কথা বলা যাবে না। যা বক্তব্য দলীয় ফোরামে বলতে হবে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে অখিল গিরির ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ও অনুশাসন নিয়ে দলের সমস্ত বিধায়ককে মঙ্গলবার এমনই কড়া বার্তা দিল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)।
এখানেই শেষ নয়, দলের সমস্ত বিধায়ককে বিধানসভার অধিবেশনে ‘নিয়মিত ও পুরো সময়’ অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। অধিবেশন চলার সময় নিজের কেন্দ্রে কোনও কর্মসূচি রাখা যাবে না। অধিবেশনের পুরো সময়টাই বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষের বক্তব্য যেমন বলতে হবে তেমনই বিরোধীদের অভিযোগের জবাব দিতে হবে বলে পরিষদীয় দলের তরফে সমস্ত তৃণমূল বিধায়ককে নির্দেশ।
শীতকালীন অধিবেশন শুরুর দ্বিতীয় দিনে বিধানসভা ভবনের নৌশাদ আলি কক্ষে তৃণমূল পরিষদীয় দলের বিশেষ বৈঠক বসে। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সাংসদ সুব্রত বক্সি, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, তাপস রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষরা। দলনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশে বিধায়কদের নিয়ে যে এই বৈঠক, তা প্রথমেই জানিয়ে দেওয়া হয়। সভাপতি সুব্রত বক্সি জানিয়ে দেন, ‘‘যেখানে খুশি, যা-তা বলে মুখ খুলে কোনওমতে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলা যাবে না। আপনি এলাকায় প্রকাশ্য সভায় দুটো চটকদারি কথা বলে হাততালি পেলেন, কিন্তু দল জনমানসে প্রবল অস্বস্তিতে পড়ল। যা বলার দলীয় ফোরামে বলতে হবে। এমন কর্মকাণ্ড দল অনুমোদন করবে না।’’
এটা যে শৃঙ্খলাভঙ্গেরই নামান্তর তা-ও তৃণমূল পরিষদীয় বৈঠকে বুঝিয়ে দেয় দলীয় নেতৃত্ব। ইদানীং মদন মিত্র থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজন বিধায়কের বক্তব্য যে দল অনুমোদন করছে না তা এদিন বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিন বিধায়কদের জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্য সরকার অস্বস্তিতে পড়ে এমন কোনও প্রশ্ন অধিবেশনে করা যাবে না। উল্লেখ্য, এদিনই বিদ্যুৎ নিয়ে শাসকদলের এক বিধায়ক প্রশ্ন তুলে সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন। তবে দলীয় বিধায়কদের বারবার অধিবেশনে নিয়মিত উপস্থিত থাকা নিয়ে সতর্ক করেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বলেন, ‘‘অধিবেশনে এসে প্রশ্নোত্তরপর্ব, কলিং অ্যাটেনশন, জিরো আওয়ার-এর মতো সমস্ত বিভাগেই বিধায়কদের অংশ নিতে হবে। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে শুধু অধিবেশনে হাজিরা দিলে চলবে না।’’
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘বিধানসভাকে গুরুত্ব দিলে এলাকার মানুষের বক্তব্য যেমন তুলে ধরা যাবে তেমনই বিরোধীদের ভাবগতিক বোঝা যাবে।’’ নয়বারের বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী বৈঠকে অধিবেশনে নানা মুখ্যমন্ত্রীর সময়ে তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। শেষে নিজের কেন্দ্রে ব্লক তৃণমূল সভাপতি নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেন করিম চৌধুরী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.