সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগাল্যান্ডে সাধারণ মানুষের উপর ভারতীয় সেনার গুলি চালানোর ঘটনায় সরব তৃণমূল। সোমবার কলকাতা থেকে তৃণমূলের চার সাংসদ-সহ ৫ জনের প্রতিনিধি দলের সে রাজ্যে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়ে যায়। এরপরই সাংবাদিক বৈঠকে তাঁদের না যাওয়ার কারণ তুলে ধরেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়রা। পাশাপাশি এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পদত্যাগও দাবি করেন তাঁরা।
মিজোরামের প্রাক্তন এজি বিশ্বজিৎ দেব বলেন, “নাগাল্যান্ডের মন জেলা প্রশাসনের তরফে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। যার জেরে যান চলাচলও কার্যত বন্ধ। আমরা খবর পেলাম যে জোরহাট থেকেই আমাদের বেরতে দেওয়া হবে না। সেই জন্য়ই যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হল। যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, সেই সব পরিবার এবং স্থানীয় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই এই প্রতিনিধি দল যাচ্ছিল। নাগাল্যান্ড সরকার এবং কেন্দ্রের মোদি সরকার এই রাজ্যের সমস্যা মেটাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সিট গঠন করেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে না। এমনটা কেন হল, তার কারণ আমরা জানতে চাই।”
রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব প্রশ্ন তোলেন, একের পর এক নাগরিককে যখন হত্যা করা হচ্ছিল, তখন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী করছিলেন? এরপরেই গোটা ঘটনার জবাবদিহি চেয়ে অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করেন তিনি। সঙ্গে যোগ করেন, নাগাল্যান্ডের ঘটনা দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিরাট বড় ব্যর্থতা।
উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে আফ্সপা (AFSPA) বা সেনাবাহিনীর জন্য বিশেষ আইন বাতিলের দাবি বহুদিনের। বিজেপি সরকারের আমলে ওই বিতর্কিত আইনের মেয়াদ আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। বিজেপির জমানায় উত্তর-পূর্বর রাজ্যগুলিতে একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটছে বলে দাবি সুস্মিতা দেবের। বিজেপি নর্থ-ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স গঠন করেছে শুধুমাত্র নির্বাচনের স্বার্থে। নির্বাচনের পর কোনও সভা হয়নি। তিনি বলেন, “মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা ও তাঁর দল এনপিপি আফ্সপা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেইফু রিও-ও টুইটারে একই বিষয়ে সুর চড়িয়েছেন।” অর্থাৎ সেনাবাহিনীর সেই বিশেষ ক্ষমতা খর্ব করার পক্ষেই এবার সওয়াল করল তৃণমূলও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে আইজলে লালডেঙ্গার (মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট) জঙ্গিবাহিনীকে খতম করতে বোমা বর্ষণ করেছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। যা হয়েছিল খোদ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে।
চলতি বছর অসম-মিজোরাম সীমানা সংঘাতে অসম পুলিশের ৬ জন কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু তৃণমূলের দাবি, নাগাল্যান্ড ইস্যুতে যেন তেমনটা না হয়। এই ইস্যুতে নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত। এরপর রাজ্যসভার সাংসদ জানান, জাতীয় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই পরিস্থিতিতে নাগাল্যান্ড সফর বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তীতে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেখানে গিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াবে তৃণমূল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.