ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: প্রথম দু’সপ্তাহ কোনও ছুটি নেই। কাজ করতে হবে প্রথম দুই শনি ও রবিবারও। কোথাও কোনও উৎসব নয়, কোনও পিকনিক নয়। সকালে বুথস্তরে নেমে দলের কর্মসূচি। দুপুর থেকেই অন্য ছবি। টেবিলের ও প্রান্তে সরকারি আধিকারিক, এ প্রান্তে দলীয় কর্মী। আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত নাকেমুখে গুঁজে চলবে ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখার কাজ। ২০২০’র প্রথম দিন থেকে এই কর্মসূচি বেঁধে দলকে পথে নামিয়ে দিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল।
পয়লা জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠা দিবস। এবছর একুশে পা দিল তৃণমূল। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি’র প্রতিবাদে এই দিনটিকে ‘নাগরিক অধিকার দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, বুথস্তরে নেমে চলবে প্রতিবাদ-আন্দোলন। সেই অনুযায়ী, বছরের প্রথম দিনকে স্বাগত জানিয়ে বৃহস্পতিবার থেকেই পথে নামছেন তৃণমূল নেতা, কর্মীরা। রাজ্যের সদর পার্টি অফিসের পাশাপাশি জেলা এমনকী বিধানসভাওয়াড়ি সমস্ত দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন হবে। তারপর দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বে হবে মিছিল। এই কর্মসূচিই বিভিন্ন স্তরে চলবে আগামী ১৫ দিন পর্যন্ত।
দলের এক মন্ত্রী তথা রাজ্যস্তরের নেতার কথায়, “এটা স্রেফ একটা নতুন বছর। ২০২০ ভাবলে চলবে না। সামনে কঠিন লড়াই। ভাবতে হবে ২০০৮ কিংবা ২০০৯-এর কথা। তখন যেমন বিরোধী ভূমিকা নিয়ে দল লড়াইয়ের ময়দানে ছিল, ঠিক সেভাবেই এবারও লড়াইয়ে নামতে হবে দলকে। সেই নির্দেশই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।” গত বছরের শেষ থেকে এনআরসি বিরোধী লড়াইয়ে নেমে পড়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাস্তায় দাঁড়িয়ে বার্তা দিয়েছেন, অল-আউট আন্দোলন চলবে। অভিযোগ তুলেছেন, ভোটার তালিকায় ভুয়ো নাম ঢুকিয়ে দিতে পারে বিজেপি। দলের কর্মীদের তাই নির্দেশ দিয়েছেন, অনলাইনে শুধু নয়, সশরীরে হাজির থেকে মিলিয়ে নিতে হবে তালিকা। ওয়ার্ড পিছু ইতিমধ্যেই তার ক্যাম্প বসে গিয়েছে। চলছে তালিকা মিলিয়ে নেওয়ার কাজ। সেই কাজই খুঁটিয়ে দেখাশোনা করার নির্দেশ গিয়েছে দলের তরফেও।
পাশাপাশি রাজ্যের ভোটারদের কাছেও আবেদন, ‘বুঝে নিন আপনার অধিকার’। শুধু তাইই নয়, নতুন বছরের শুরুতে দলের তরফ থেকে শপথও নেওয়া হচ্ছে। আর কয়েক মাস পর পুরভোট। তার আগে পুরোপুরি জনসংযোগে জোর দিয়ে মাঠে নামতে হবে। এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, বছরের প্রথম দিন থেকেই কাজটা করতে হবে। মানুষকে মিথ্যা বলা চলবে না। যতটা কাজ হয়েছে, ততটাই বলতে হবে। যদি সবটুকু কাজের কথা বলতে হয়, তবে সবটুকু কাজ আগে করে দেখাতে হবে। দলকে বুথস্তরে নিয়ে যেতে হবে। ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শেষ হলে তবেই ছুটি। এর পাশাপাশি বৃহস্পতিবার দলের সমস্ত শাখা সংগঠনের নিজস্ব কর্মসূচি রয়েছে। রয়েছে জয়হিন্দ বাহিনীর মিছিলও। তাছাড়া বিধায়ক, সাংসদরা প্রত্যেকে নিজেদের এলাকায় দলীয় নির্দেশ মেনে কর্মসূচি পালন করবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.