সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামিকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার লোকসভা নির্বাচনের জন্য ৪২টি কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করবে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাটে দলের জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করবেন। বৈঠকের পরই ঘোষিত হবে প্রার্থী তালিকা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই অধিকাংশ আসনের প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত করে ফেলেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছু কিছু আসন নিয়ে এখনও দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে। তা মঙ্গলবারের বৈঠকেই মিটিয়ে ফেলা হবে। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত নেতানেত্রীদের প্রায় প্রত্যেকেই আবার টিকিট পাচ্ছেন। তবে, বাদ পড়তে পারেন অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয় সাংসদরা। এই তালিকাটিও নেহাত ছোট নয়। এই বাদ পড়া সাংসদদের পরিবর্তে আসছে বেশ কিছু তরুণ এবং তরতাজা মুখ।
প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত হয়ে গেলেও শেষ সিদ্ধান্ত অবশ্যই নেবেন দলনেত্রী। শেষ মুহূর্তেও তালিকায় পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্প্রতি দলের কোর কমিটির বৈঠকে প্রার্থী নিয়ে প্রাথমিক আলোচনার পর দলনেত্রীর উপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার ছেড়েছিলেন নেতাকর্মীরা। তৃণমূল সূত্রে যা খবর, তাতে দলের অভিজ্ঞ, বর্ষীয়ান সাংসদদের অধিকাংশই ফের প্রার্থী হচ্ছেন। উত্তর কলকাতা থেকে প্রার্থী হচ্ছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ই। প্রথমে নিমরাজি থাকলেও পরে দক্ষিণ কলকাতা থেকে প্রার্থী হতে রাজি হয়েছেন সুব্রত বকসি। যাদবপুর এবং দমদম কেন্দ্রের প্রার্থী যথাক্রমে সুগত বসু ও সৌগত রায়। বারাসত থেকে ফের প্রার্থী হচ্ছেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লড়বেন ডায়মন্ডহারবার থেকেই। নিজেদের কেন্দ্র থেকে এবারও প্রার্থী হচ্ছেন অধিকারী পরিবারের দুই সদস্য। তমলুক থেকেই দিব্যেন্দু অধিকারী, আর কাঁথি কেন্দ্রে লড়বেন প্রবীণ নেতা শিশির অধিকারী। পুরনো সাংসদদের মধ্যে ফের টিকিট পাচ্ছেন দুই অভিনেতা দেব এবং শতাব্দী রায়। দেব ঘাটাল থেকে এবং শতাব্দী নিজের কেন্দ্র বীরভূম থেকেই লড়বেন। দলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল অবশ্য শতাব্দীকে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তিনি দলনেত্রীকে জানিয়েছেন, শতাব্দীর পরিবর্তে জেলায় দলের সহ-সভাপতি অভিজিত সিংহ ওরফে রানাকে টিকিট দেওয়া হোক। কারণ, দেওচা-পঁচামির মতো কয়লাখনি এবং ঝাড়খণ্ড লাগোয়া সীমান্ত সামলাতে শতাব্দী রায়ের চেয়ে ডাকাবুকো রানাই অনেক বেশি যোগ্য।তবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক জেলায় দুটি প্রার্থী বদলের পক্ষে নন। বোলপুরে বহিষ্কৃত সাংসদ অনুপম হাজরার পরিবর্তে অসিত মালকে প্রার্থী করতে হচ্ছে, তাই এ যাত্রা শতাব্দীর ভাগ্যে শিঁকে ছিঁড়ল। টিকিট পাওয়া কার্যত নিশ্চিত কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রত্না দে নাগ, সাজদা আহমেদের।তালিকায় অন্যতম বড় চমক হতে পারেন দার্জিলিং বিধানসভা কেন্দ্রের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বিধায়ক বিনয় রাই। তিনি তৃণমূলের সমর্থনে লড়বেন বলে সূত্রের খবর। তবে, মুনমুন সেনের প্রার্থী হওয়া নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কাল দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকেই নেওয়া হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
এ তো গেল পুরনো সাংসদদের কথা। নতুনদের মধ্যে সবচেয়ে বড় চমক হতে পারেন দুই সেলিব্রিটি প্রার্থী। তৃণমূল সূত্রের খবর, মেদিনীপুরে সন্ধ্যা রায়কে এবার টিকিট দিচ্ছে না দল। তাঁর পরিবর্তে টিকিট পেতে পারেন ইন্দ্রাণী হালদার। অন্যদিকে, বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে মমতাজ সংঘমিতার পরিবর্তে প্রার্থী হওয়া কার্যত নিশ্চিত টলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নূসরত জাহানের। নতুন মুখের মধ্যে মারিয়া ফার্নান্ডেজ এবং মহুয়া মৈত্রকে নিয়েও আলোচনা চলছে। যদিও, কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে মহুয়ার প্রার্থী হওয়াটা নির্ভর করছে জেলার পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডলের উপর। সূত্রের খবর, তাপস পালের জায়গায় প্রার্থী হিসেবে মহুয়াকে চাইছেন না কেষ্ট। দলনেত্রীর কাছে তিনি অন্য কারও নাম পাঠিয়েছেন। বাদের তালিকায় রয়েছেন ডঃ উমা সোরেন, অপরূপা পোদ্দারের মত সাংসদরাও। সব মিলিয়ে তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতার সঙ্গে গ্ল্যামার জগতকে জুড়ে এবারের লোকসভায় বাজিমাত করতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। তবে, শেষ পর্যন্ত প্রার্থীতালিকায় আর কোনও পরিবর্তন হয় কিনা সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.