সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যসভার ষষ্ঠ আসনের লড়াই ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ। কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্যকে পূর্ণ সমর্থনের কথা ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় নিজের ঘরে আবদুল মান্নান ও প্রদীপ ভট্টাচার্যকে ডেকে নিজেদের অবস্থানের কথা জানান। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বামেদের অরাজনৈতিক প্রার্থী নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তৃণমূলের সমর্থনের পর প্রদীপের রাজ্যসভায় যাওয়া নিয়ে আর সংশয় রইল না। তবে লড়াইয়ে নামলেও, বাম প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্যের ধারণা ভবিষ্যতে কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের ঐক্য বজায় থাকবে।
এক বছরের মধ্যেই কি কংগ্রেস এবং সিপিএমের সমঝোতা শেষ হয়ে গেল। রাজ্যসভার ষষ্ঠ আসনের নির্বাচন ঘিরে নতুন অঙ্ক সেই জল্পনায় ইন্ধন দিয়েছে। প্রদীপ ভট্টাচার্যকে সমর্থনের মধ্যে দিয়ে দুই কংগ্রেস আরও কাছাকাছি চলে এল। ওই আসনে কংগ্রেসের পাশে থাকার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ষষ্ঠ আসনে প্রার্থী নিয়ে বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। প্রার্থী নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পরও বামেরা ঐক্যমত্য আসতে পারেনি। সিপিএম পলিটব্যুরোর এই অবস্থানে বিরক্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস নেতৃত্ব নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। বৃহস্পতিবার প্রদীপ ভট্টাচার্যের নাম জানায় কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। সন্ধ্যায় বিস্তর আলোচনার পর সিপিএম নেতৃত্ব ষষ্ঠ আসেন অরাজনৈতিক প্রার্থী হিসাবে বিকাশ ভট্টাচার্যের নাম ঘোষণা করে। তারপরই দুই দলের মতান্তর স্পষ্ট হয়। হাইকমান্ডের নির্দেশে মনোনয়ন পেশ করেন প্রদীপ। বিধানসভায় এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজের ঘরে ডেকে নেন কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্য ও বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানকে। তিনি তাদের জানান কংগ্রেস প্রার্থীকে তৃণমূল সমর্থন করবে। এই নিয়ে প্রদীপ ভট্টাচার্যর বক্তব্য, আমাদের পূর্ণ সমর্থনের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী সবরকম সাহায্য করবেন। তবে বামেদের এই অবস্থানে তারা যে বিরক্ত তা বুঝিয়েছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা। তাঁর সংযোজন, কংগ্রেস প্রত্যাশা করেছিল বামেদের সহযোগিতা মিলবে। তবে তৃণমূল ও কংগ্রেস কাছাকাছি আসা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি প্রদীপ। এদিনে বামেদের অরাজনৈতিক প্রার্থীর তত্ত্ব উড়িয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন যিনি পাঁচ বছর বামেদের হয়ে মেয়রের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি কীভাবে অরাজনৈতিক প্রার্থী হন। বামপ্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্য জানান, দেশ জুড়ে ফ্যাসিবাদীর আক্রমণের বিরুদ্ধে এই লড়াই। রাজ্যসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ভাঙলেও ভবিষ্যতে ঐক্য থাকবে বলে মনে করেন বিকাশ। ভোটে নিজেদের ৫ প্রার্থীকে জেতানোর পর তৃণমূলের হাতে বাড়তি থাকবে ৬টি ভোট। এই ভোট পেলে প্রদীপের জেতা নিশ্চিত।
প্রদীপকে সমর্থনের মাধ্যমে দুই কংগ্রেস আরও কাছাকাছি এল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত কয়েক মাসে একাধিক বিষয়ে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে এক সুরে এগিয়েছে তৃণমূল। তবে রাজ্য স্তরে টানাপোড়েন চললেও প্রদীপকে তৃণমূলের সমর্থনে ব্যবধান অনেকটা কমল বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.