সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুধবার শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে তিনিও বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নয়াদিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে দেখা যায়নি বিদ্রোহী তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্তকে। কিন্তু পরেরদিনই, ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে এসে শোভন ও কেন্দ্রের স্তুতি করে বিজেপি যোগের জল্পনা বাড়ালেন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাশ্মীর ইস্যুতে পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করে বললেন, ‘১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার ৭২ বছর পর কাশ্মীরে প্রথম জাতীয় পতাকা উড়ল। এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের সৌজন্যে। এটা সত্যিই প্রশংসনীয়।’ একইসঙ্গে বললেন, শোভন যে দলেই যাবে তারই লাভ। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপিতে তাঁর পা বাড়িয়ে রাখার জল্পনা উসকে উঠল এই মন্তব্যে। পাশাপাশি আগামিকাল, শুক্রবার দিল্লি যাচ্ছেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই তৃণমূলের অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছিলেন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত৷ কখনও আলটপকা বা কখনও দলবিরোধী মন্তব্য করে তৃণমূলকে চাপে ফেলছিলেন তিনি৷ এর মধ্যে একাধিকবার বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গেও প্রকাশ্যে সাক্ষাৎ করেন তিনি৷ তখন থেকেই তাঁর বিজেপিতে যোগদানের চর্চা শুরু হয়৷ অবশেষ তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে শাসকদল৷ মাঠে নামেন খোদ রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম৷ সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিধাননগরের কাউন্সিলররা৷ এবং সেই অনাস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যান সব্যসাচী৷ জিতেও আসেন৷ তবে আশ্চর্যজনক ভাবে সঙ্গে সঙ্গে মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি৷ বুধবার সংবাদ সংস্থা এএনআই টুইট করে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তাঁরও বিজেপিতে যোগ দেওয়ার খবর জানায়। কিন্তু শেষপর্যন্ত বিজেপি দপ্তরে যাননি তিনি।
তবে বৃহস্পতিবার সল্টলেকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে এসে ৩৭০ ধারা বিলোপ করে মোদি সরকারের কাশ্মীর পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন সব্যসাচী দত্ত। একইসঙ্গে তিনি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে বলেন, ‘তিনি দীর্ঘদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি ছিলেন। তাঁর মতো দক্ষ সংগঠক যে দলেই যাবেন সেই দলেরই লাভ। ওনার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিনের।’ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবার তিনি নয়াদিল্লি যাচ্ছেন। তবে তিনি কি ওইদিনই বিজেপিতে যোগ দেবেন? তার উত্তরে কিন্তু ধোঁয়াশা বজায় রেখে জানিয়েছেন, তিনি ব্যক্তিগত কাজেই যাচ্ছেন। সেখানে কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়লেও এখনও নিজেকে তৃণমূলের সৈনিক হিসাবেই মানেন সব্যসাচী। তাঁর স্পষ্ট কথা, দল যা সিদ্ধান্ত নেবে সেই অনুযায়ী চলব। বোঝাই যাচ্ছে, দল তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না নিলে তিনি তৃণমূল ছাড়তে চাইছেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.