ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে মাথায় হাত পড়েছে। নিত্য তার আঁচে পুড়ছে ঘর-গেরস্থালি৷ কৃষিঋণ মকুবের নামগন্ধ নেই৷ তাই বাইক নয়, ভাড়ার চার চাকা তো নয়ই। সাইকেল চালিয়ে ঘুরেই কেন্দ্র-বিরোধী স্লোগান তুলবেন কৃষকরা। সৌজন্যে তৃণমূল কংগ্রেস!
উদ্দেশ্য ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসের প্রস্তুতি। কিন্তু তার আগেই রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্প্রতি খারিফ শস্যের সহায়ক মূল্য দেড় গুণ বাড়িয়েছে কেন্দ্র সরকার। মোদিকে অভিনন্দন জানাতে তাই বিভিন্ন প্রদেশে সম্মেলনের আয়োজন করছে বিজেপি। ১৬ জুলাই মেদিনীপুরে হবে মোদির সেই সম্মেলন। কিন্তু কৃষিৃঋণ মকুব না করায় কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে বড়সড় প্রতিবাদের রাস্তায় গিয়েছেন গোটা দেশের কৃষকরা। স্বাভাবিকভাবে সেই পথে হেঁটেই এই অভিনব উপায়ে মোদির বিরোধিতার পথ ধরেছে তৃণমূলও। ২১ জুলাই তাদের শহিদ দিবসের কর্মসূচিকে সামনে রেখে তাই রাজ্যজুড়ে সাইকেল ব়্যালি করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের কিষাণ খেতমজদুর কমিটি।
কমিটির সদস্যরা সকলে অবশ্যই কৃষক। ঠিক হয়েছে, একই দিনে নয়, রাজ্যের সমস্ত ব্লকে তৃণমূলের কিষান খেতমজদুর কমিটির সেইসব এলাকার কৃষকরা পথে নামবেন নিজেদের সুযোগ-সুবিধামতো। ২১ জুলাইয়ের আগে হাতে সময় আছে আর দশদিন। মোদির কর্মসূচি ধরলে সময় আরও কম। এই সময়টিকেই কাজে লাগাতে চাইছে কমিটি। ইতিমধ্যে মোদির বাংলা সফরের দিনটিকে কালাদিবস হিসাবে পালন করবেন বলে জানিয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক বেচারাম মান্না। কালো ব্যাজ পরে চলবে প্রতিবাদ সভা। নামবে মিছিল। তার মধ্যেই ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি। সব মিলিয়ে লাগাতার এই সাইকেল ব়্যালি চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছে কমিটি।
কিন্তু, এভাবে সাইকেল ব়্যালি করে কি বড় এলাকায় দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব? বেচারাম বলেন, “বড় এলাকায় পৌঁছানোর থেকেও বেশি জরুরি বেশি মানুষকে আমাদের কর্মসূচির সঙ্গী করে নেওয়া। ভোটের মুখে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যে কৃষক-দরদী হওয়ার চেষ্টা করছেন। বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে আমরা তাঁর মুখোশটা খুলে দিতে চাই৷ আমাদের কাজ তো গ্রামের কৃষক-খেতমজদুরদের নিয়ে৷ তাঁদের তো ঘরে ঘরে সাইকেল। সেই সাইকেল নিয়েই আমরা প্রতিবাদে নামব।”
[ মাঠে কাজ করার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু, উত্তেজনা মুর্শিদাবাদে ]
বেচারাম আরও বলেন, “তৃণমূল এমনিতেই গরিবের পার্টি। তাতে মানুষের যোগদানই মূলধন। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে যোগ দিলেই সেই কর্মসূচি সফল হবে। সে কারণেই আমরা এই সাইকেল ব়্যালির পদ্ধতি বেছে নিয়েছি।” এর আগে সাইকেলে চড়ে ঘুরে ভোটের প্রচার অনেকবার করেছেন বেচারাম। নিজেই সে কথা জানিয়ে বলেছেন, “আমি দেখেছি, এভাবে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাওয়া যায়। আর গ্রামের পথে চলতে চলতে তাদেরও সঙ্গে নিয়ে নেওয়া যায়।” শীর্ষ নেতৃত্বকে এই কর্মসূচির কথা জানিয়েও দিয়েছেন আহ্বায়ক। ইতিমধ্যে কমিটির তৃতীয় রাজ্য সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে কমিটি। পুজোর আগে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সময় পেলে সেপ্টেম্বরে, আর তা না হলে একেবারে জানুয়ারি মাসে বছরের শুরুতে সেই সম্মেলন হওয়ার কথা। তার আগেই কোমর বেঁধে এই কর্মসূচি নিয়ে পথে বেরিয়ে পড়তে চাইছে তৃণমূলের কৃষক খেতমজদুর কমিটি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.