স্টাফ রিপোর্টার: পঞ্চায়েত, সমিতি ও জেলাপরিষদের বোর্ড গঠনের আগে দলীয় আনুগত্য ও শৃঙ্খলাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর দলের সেই বার্তা সামনে রেখেই শনিবার মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলার বিধায়ক এবং নেতাদের কড়া অনুশাসনের বার্তা দিল রাজ্য তৃণমূল (TMC)।
মুর্শিদাবাদের ১৯ ও মালদহের ৭ তৃণমূল বিধায়ক এবং জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি ও চেয়ারম্যানকে নিয়ে এদিন তৃণমূল ভবনে বৈঠক হয়। ছিলেন রাজ্য তৃণমূল সভাপতি ও সাংসদ সুব্রত বক্সী (Subrata Baksi) এবং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বৈঠকে দুই জেলার নেতাদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘‘২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। দলে থাকতে হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশই যেমন চলতে হবে, তেমনই নেত্রীর প্রতি আনুগত্য রাখতে হবে।’’ একইসঙ্গে রাজ্য তৃণমূল সভাপতি বলেন, বিরোধীদের প্ররোচনার ফাঁদে কোনওভাবে পা দেওয়া চলবে না। পঞ্চায়েত, সমিতির বোর্ড গঠনে কোথাও যাতে অশান্তি না হয় তার জন্য জেলার বিধায়কদেরই নজর রাখতে হবে।’’ রেজিনগরের বিধায়ক হুমায়ন কবীরের মতো বির্তকিতদের বৈঠকে রেখে কড়া বার্তা দিয়ে সুব্রত বক্সী বলেন, ‘‘দলীয় ফোরামের বাইরে মিডিয়ায় কোনওভাবে মুখ খোলা যাবে না। যা বলার দলকেই জানতে হবে।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচন শুরু থেকেই প্রার্থী বাছাই ও অন্যান্য ইস্যুতে সংবাদমাধ্যমে বারে বারে মুখ খুলে দলের অস্বস্তির কারণ হয়েছিলেন রেজিনগরের বির্তকিত তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। কিন্তু তৃণমূল ভবনে জেলার বৈঠকের আগের দিনই নিজের বক্তব্যের জন্য অনুতপ্ত জানিয়ে দলের কাছে ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খোলা যে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব বরদাস্ত করছে না তা বৈঠকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন সুব্রত বক্সী। সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলা নিয়ে তিনি কড়া ভাষায় বলেন, ‘‘টিভি চ্যানেলে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুললে দু-চারদিন হই-হই হবে। টিভির পর্দায় নিজের মুখ দেখে ভালো লাগবে। কিন্তু মাথার পিছন থেকে নেত্রীর ছবিটা সরে গেলে কয়েকদিন পরে বাজারে আর কেউ চিনতে পারবে না। মনে রাখবেন, দল ও দলনেত্রীর ছবি সঙ্গে আছে বলেই আপনাকে টিভি চ্যানেলও গুরুত্ব দেয়, নইলে কোনও মূল্য নেই। প্রেস-মিডিয়ায় নয়, বক্তব্য থাকলে দলীয় ফোরামেই বলতে হবে।’’
বিধানসভা ও পঞ্চায়েত ভোটের আগে দফায় দফায় নানা কর্মসূচি এবং বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় ফিরহাদকে পাঠিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী দলের নবজোয়ার কর্মসূচিতেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দুই জেলায় একাধিক ব্লকে ছিলেন কলকাতার মেয়র। স্বভাবতই ফের সংখ্যালঘু প্রধান এই দুই জেলায় জেলাপরিষদ বোর্ড গঠনে রাজ্য সভাপতির পাশাপাশি ফিরহাদকেই (Firhad Hakim) গুরুদায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.