সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভুবনেশ্বর থেকে কলকাতায় ফিরে অ্যাপোলোতে ভর্তি হয়েছিলেন উত্তর কলকাতার তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সেখান থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হল তাঁকে। সূত্রের খবর, তৃণমূল সাংসদকে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ব্লকে ভর্তি করা হয়েছে। সুদীপের জন্য মেডিক্যাল বোর্ডও তৈরি করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
আদালতের নির্দেশে জামিন পাওয়ার পরে ভিন রাজ্যের হাসপাতাল থেকে নিজের শহরে ফিরলেও এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি অসুস্থ সাংসদ। ভুবনেশ্বরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন গত শুক্রবার ওড়িশা হাই কোর্ট জামিন দেয় রোজভ্যালি-মামলায় অভিযুক্ত সুদীপবাবুকে৷ গত রবিবার ভুবনেশ্বর থেকে বিমানে তিনি কলকাতায় ফেরেন৷ কিন্তু তাঁর শরীর এতটাই খারাপ যে, তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নেননি সুদীপ-জায়া নয়না৷
তবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কাছে হার মানতে নারাজ সাংসদ স্পষ্ট জানিয়েছেন, সক্রিয় রাজনীতি ছাড়ার কোনও প্রশ্ন নেই৷ “একটু সুস্থ হলেই সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরব৷ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনেই চলব৷ তাঁর সঙ্গে দেখা করব৷” বলেছেন তিনি৷ এও জানিয়েছেন, “অনেক কষ্টে রাজনৈতিক জীবন গড়েছি৷ কখনও কোনও দুর্নীতির সঙ্গে আপস করিনি৷” জনতার দরবারে সুদীপবাবুর আবেদন, “আমার প্রতি বিশ্বাস রাখুন৷ আস্থা রাখুন৷ আর যা-ই হোক, আমি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নই৷”
ওড়িশা হাই কোর্ট সুদীপবাবুর জামিন মঞ্জুর করেছিল তিনটি শর্তে৷ সে সব পূরণ করে খুরদা জেলে কোর্টের নির্দেশনামা জমা করার পর মুক্তি মেলে। বাইপাসের ধারে অ্যাপোলো হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়৷ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় সুদীপবাবু আবেগতাড়িত কণ্ঠে বলেন, “অনেকদিন বাদে বাংলার মাটিতে ফিরলাম৷ ভাল লাগছে৷” তাঁর প্রত্যয়ী ঘোষণা, “আমি একটা জিনিস জানি৷ মানুষ বিশ্বাস করেন না যে, কোনও দুর্নীতির সঙ্গে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় যুক্ত৷”
আগেও সুদীপবাবু জোর গলায় দাবি করেছেন, রোজভ্যালির দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর যোগ নেই৷ “শুধু শারীরিক কারণে কোর্ট আমাকে জামিন দেয়নি৷ বরং বিচারপতি জানিয়েছেন, দুর্নীতির সঙ্গে আমি যুক্ত, এমন প্রত্যক্ষ প্রমাণ মেলেনি৷ এটা বড় ব্যাপার৷” তিনি আরও বলেন, “বিচারব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা আছে৷ ছিল৷ থাকবে৷ রোজভ্যালির সঙ্গে আমার কোনও ব্যক্তিগত আর্থিক লেনদেন প্রমাণিত নয়৷ নেত্রী আমাকে দেখতে এসেছিলেন মানেই আমি প্রভাবশালী নই৷ আমার সমস্ত সম্পত্তি, আয় তো ঘোষিত!” বন্দি হয়ে এত দিন সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকার জন্য আক্ষেপও ঝরে পড়েছে বর্ষীয়ান নেতার গলায়৷ “আমি রেলের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান৷ দলের সংসদীয় নেতা৷ কত দিনে সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরব, তা ঠিক হবে আমার শরীর কেমন থাকে, তার উপর৷” মন্তব্য সুদীপবাবুর৷ তাঁর কথায়, “প্রায় সাড়ে চার মাস বন্দি৷ শরীর ভেঙেছে৷ বুকে ব্যথা৷ অন্যান্য সমস্যা তো আছেই৷ এখন সামান্য ভাল৷ একটু বিশ্রাম দরকার৷ তবে একটু সুস্থ হলেই রাজনীতির ময়দানে ফিরব৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.