সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক-দু’বার নয়, দশ দশবার তলব এড়িয়েছেন। যার পরিণাম, গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া। বৃহস্পতিবার সকালে বোলপুরে, নিজের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন সিবিআই (CBI) আধিকারিকরা। বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) গ্রেপ্তারির পর তৃণমূল নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে তৃণমূল। কোনওরকম দুর্নীতির বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা জানিয়েছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সমীর চক্রবর্তীরা। তবে তারই মধ্যে তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra) বিস্ফোরক দাবি করে বসলেন। প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ”বারবার যখন সিবিআই ডাকছিল, তখন ও চাইলেই যেতে পারত। দল তো বারণ করেনি। দল বারণ করলে পিজি (এসএসকেএম) থেকে সহজেই একটা রিপোর্ট বের করা যেত। যাতে বলা যেত, অনুব্রত মণ্ডল এত অসুস্থ যে হাসপাতালে ভরতি হতে হবে।”
ইডি, সিবিআইয়ের ‘অতিসক্রিয়তা’, বিজেপির ‘ইন্ধন’ – এসবকেই অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেপ্তারির নেপথ্যে দায়ী করেছেন মদন মিত্র। নানা বিষয় নিয়ে তিনি বিজেপিকে তোপ দেগেছেন। তবে তারই মাঝে বেফাঁস কথা বলে ফেললেন কামারহাটির জনপ্রিয় বিধায়ক। দশবার সিবিআই তলব পেয়েও গরহাজির ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করেননি। তাঁর এই ভূমিকা নিয়ে মদন মিত্রকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাফ জানান, কেন যায়নি, তা তো যিনি যাননি, তিনিই বলতে পারবেন। মদন মিত্রের কথায়, ”অনুব্রত গেলেই পারতেন। আমাকে তো যতবার ডেকে পাঠিয়েছিল, আমি গিয়েছিলাম। যা জিজ্ঞেস করেছে, তার জবাব দিয়েছি। অনুব্রতও তেমনটাই করতে পারতেন। দল তো ওকে বারণ করেনি যেতে। বারণ করলে তো পিজি (এসএসকেএম) হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট বের করাই যেত যে অনুব্রত এত অসুস্থ হাসপাতালে ভরতি হতে হবে।” আর মদনের এই মন্তব্য নিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছে শোরগোল।
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় যখন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী গ্রেপ্তারির সময় এসএসকেএম হাসপাতালের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছিল পরোক্ষভাবে। এই হাসপাতালের রিপোর্টের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই কারণে তাঁকে ভুবনেশ্বরের এইমসে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়। দুই হাসপাতালের ভিন্ন রিপোর্ট নিয়ে যথেষ্ট চর্চা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অনুব্রত মণ্ডলের চেক আপের পর চিকিৎসক স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, হাসপাতালে ভরতি হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। মদন মিত্রর এদিনের মন্তব্য স্বভাবতই বিতর্ক তৈরি করেছে।
এনিয়ে চিকিৎসক তথা তৃণমূলের সাংসদ ডা. শান্তনু সেন বিশেষ কিছু বলতে চাননি। তাঁর মন্তব্য, “চিকিৎসকরা এথিক্যালি কাজ করেন। সেই চিকিৎসক যখন কোনও রোগীকে দেখেন তখন সেই মুহূর্তে তাঁর উপসর্গ বা সমস্যা দেখে রোগীর জন্য যেটা সঠিক মনে করেন সেটাই প্রেসক্রাইব করেন। কখনওই কোনও অসুস্থ রোগীকে সুস্থ বা সুস্থ রোগীকে অসুস্থ বলেন না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.