সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জল্পনা সত্যি করে শুক্রবার দুপুরে রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ইস্তফাপত্র পাঠানোর পর আনুষ্ঠানিকভাবে রাজভবনে গিয়েও নিজের পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে স্বভাবতই বিধানসভা ভোটের আগে নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। তৃণমূল, বিজেপি নির্বিশেষে সব দলের নেতৃত্বই বিষয়টিকে নিজস্ব দৃষ্টিতে দেখছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সরাসরি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপিতে স্বাগত জানিয়ে রেখেছেন। তৃণমূলের একাংশের মত, এই পদত্যাগ দলের কোনও ক্ষতি করবে না। আবার কারও মত, এভাবে রাজ্যের মন্ত্রীদের ইস্তফা দুর্ভাগ্যজনক।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় খানিকটা বেসুরো হতেই তাঁকে বোঝানোর জন্য দফায় দফায় তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় আলোচনায় বসেন। সেই বৈঠক সেরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি বনমন্ত্রী। তবে মন্ত্রী হিসেবে কাজ করতে বাধা পাচ্ছেন, সেই অভিযোগে বারবারই সরব হতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। গত শনিবার ফেসবুক লাইভ করে ধৈর্য ধরার কথা বললেও দলের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন যথেষ্টই। এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতে তিনি মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন। এ নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ”উনিই বলতে পারবেন, কেন ছাড়লেন। নিশ্চয়ই কোনও অসুবিধা হচ্ছিল। তবে আমি বলব, এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। একদিন তাঁরা ঠিক বুঝবেন। কোনও কর্মী তো দল ছাড়ছেন না। কর্মীরাই দলের সম্পদ।”
যাঁর সঙ্গে রাজীবের সবচেয়ে বেশি দ্বন্দ্ব ছিল বলে হাওড়ার রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, রাজ্যের আরেক মন্ত্রী অরূপ রায়ও তাঁর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তেমন বিচলিত নন। তাঁর কথায়, ”দল কতদিন ধরে করছে? আমরা বহু আগে থেকে দল করছি। কেউ কেউ দলে নতুন যোগ দিয়ে, কাজ করার পরই যদি নানারকম বায়না, নালিশ করেন, তাহলে মুশকিল। যা হওয়ার তাই হয়েছে। এতে দলের কোনও ক্ষতি নেই। দল ঐক্যবদ্ধই রয়েছে।” হাওড়ার বালির বিধায়ক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য প্রতিক্রিয়া, ”এভাবে রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে একে একে সদস্যদের ইস্তফা দুর্ভাগ্যজনক। এতেই বোঝা যাচ্ছে, দলের একাংশে কতটা ঘুণ ধরেছে। আমি আগেই একথা বলেছিলাম। দলনেত্রী খুব যত্ন করে হাওড়ায় সংগঠন তৈরি করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তা ভেঙে পড়ছে।”
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফার খবর জেনে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) প্রতিক্রিয়া, ”উনি ওনার মতো করেই সিদ্ধান্ত নেবেন। এখনও কোনও ঘোষণা করেননি বিজেপিতে আসা নিয়ে। তাই এ বিষয়ে বেশি কিছু বলব না। শুধু এটুকু বলি, ওঁ বিজেপিতে এলে স্বাগত।” পাশাপাশি তাঁর শ্লেষ, তৃণমূলে সকাল-বিকেল ভাঙন চলছে। কে কখন আছে, কখন নেই, তা বুঝতে পারছেন না নেত্রীও। কৈলাস বিজয়বর্গীয়র প্রতিক্রিয়া, ”রাজীব জননেতা। তৃণমূলে অনেক সৎ নেতা-মন্ত্রী আছেন, যাঁরা রাজ্যের উন্নয়ন চান। সেরকম ভাল লোকেদের বিজেপিতে আসা দরকার।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.