নিজস্ব চিত্র
স্টাফ রিপোর্টার: বেনারসের গঙ্গা আরতিতে স্ট্যান্ডের সংখ্যা হাতে গুনে সাতটা। ষোলোটি ইস্পাতের বেদির ওপর দাঁড়িয়েই একশো আটটা প্রদীপে কলকাতায় গঙ্গা আরতি করেন পুরোহিতরা। নকল নয়। কলকাতার গঙ্গা আরতি মৌলিক। নিজস্ব স্বকীয়তায় উজ্জল। শনিবার গঙ্গা আরতির বর্ষপূর্তিতে সেই শব্দই ধ্বনিত হল বারবার। এদিন একবছরে পড়ল কলকাতার বাজেকদমতলা ঘাটের গঙ্গা আরতি। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে হাজির ছিলেন দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায়, মেয়র পারিষদ তারক সিং, কলকাতা পুরসভার সচিব স্বপন কুণ্ডু।
গঙ্গা আরতিতে বাঙালি কই? এদিন বছর পূর্তিতে সমালোচকদের জবাব দিলেন মেয়র পারিষদ তারক সিং। বললেন, ‘‘অনেকে শহরের গঙ্গাপুজোকে অবাঙালিদের পুজো বলে দাগিয়ে দিচ্ছেন, এটা ঠিক নয়। শহরের গঙ্গা আরতির ২২ পুরোহিতের মধ্যে নজনই বাঙালি। ইচ্ছে আছে ২২ জন বাঙালি পুরোহিতকে দিয়ে পুজো করানোর। কিন্তু গঙ্গা পুজোর নিয়ম কানুন জানা বাঙালি পুরোহিত পাচ্ছি না।” অন্যদিকে, সাংসদ পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই কলকাতায় গঙ্গা আরতি শুরু হয়েছে। তাকে রূপদান করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মেয়র পারিষদ তারক সিং।’’
রবিবার গঙ্গা আরতির বর্ষপূর্তিতে শোনানো হবে, ‘কলকাতা কি জলকথা।’ গঙ্গাকে ঘিরে বেড়ে ওঠা কলকাতার ইতিহাস। বাংলায়-হিন্দিতে। বছর দুয়েক আগের কথা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন, শহরের গঙ্গার ঘাটে আরতির ব্যবস্থা করতে হবে। এর পরেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ গঙ্গার একাধিক ঘাট পরিদর্শন করেন। তার থেকে বেছে নেওয়া হয় বাজেকদমতলা ঘাটকে। শতাব্দী প্রাচীন গঙ্গার ঘাটে আরতি কেমন হবে? তার স্কেচ তৈরি করেন অভিষেক সিং। সেই নকশা মেনেই তৈরি হয় গঙ্গা আরতির প্রস্তুতি। ২০২৩ সালের উদ্বোধন হয় কলকাতার গঙ্গা আরতির। যেখানে ষোলোটি ইস্পাতের বেদির ওপর দাঁড়িয়েই একশো আটটা প্রদীপে গঙ্গা আরতি করেন পুরোহিতরা। একদিকে গাঁদা ফুলের বিছানা।
অন্যদিকে, দর্শকদের জন্য বসার ব্যবস্থা। বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এদিন দুপুর দুটো থেকে শুরু হবে গঙ্গা দেবীর বিশেষ পুজো। অনুষ্ঠিত হয় গঙ্গা আরতি। রাত আটটা থেকে ডান্ডিয়া নৃত্য। আজ বাজে কদমতলা ঘাটে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কনসার্ন ফর ক্যালকাটা। সংস্থার সম্পাদক জয়িতা বসু জানিয়েছেন, দর্শনার্থীদের সাড়ে চারটের মধ্যে বাজে কদমতলা ঘাটে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। প্রথমে হবে ‘কলকাতা কি জলকথা’। এর পর নৃত্যনাট্য ওম গঙ্গা। গঙ্গাকে পিছনে রেখে নদীমাতৃক গানে নৃত্য পরিবেশন করবেন শিল্পীরা। দুদিনই লুচি হালুয়া ভোগ খাওয়ানো হবে কলকাতা পুরসভা এবং দেবোত্তর জয় চণ্ডী ঠাকুরানি ট্রাস্টের পক্ষ থেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.