সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাক্তন তৃণমূল নেতা পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুসংবাদ ঘিরে বিভ্রান্তি! বিরল ঘটনায় হতবাক বাংলার রাজনৈতিক মহল। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তথা প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়কে মৃত ঘোষণা করেছিল ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতাল। কিন্তু বাড়িতে আনার কিছুক্ষণ পরই তাঁর শরীরে প্রাণের লক্ষণ দেখা যায়। তাঁর নাড়ি সচল বলে দ্রুত পঙ্কজবাবুকে ফর্টিস হাসপাতালে নিয়ে যান টালিগঞ্জের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ততক্ষণে সর্বত্র পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারিভাবে শোকবার্তাও জানিয়ে দেন। বিধানসভায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শোকবার্তার সঙ্গে সঙ্গে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য তৃণমূল নেতার বাড়িতে আসেন। তখনই ঘটে আজব ঘটনা। স্থানীয় ডাক্তার দীপক বোস লক্ষ্য করেন পঙ্কজবাবুর শরীরে হৃদস্পন্দন। তা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে জানাতেই তড়িঘড়ি তিনি পঙ্কজবাবুকে নিয়ে যান ফর্টিস হাসপাতালে। তবে সেখানেও মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
শুক্রবার প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বিধানসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুসংবাদ জানাজানি হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিক ও কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। শুক্রবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ অ্যাম্বুল্যান্সে করে ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে হাসপাতালে যাওয়ার পথেই তাঁর ‘মৃত্যু’ হয়েছে বলে রটে। মৃত ঘোষণা করে আমরি হাসপাতাল। দুপুর সওয়া একটা নাগাদ তাঁর দেহ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের মৃত্যুর খবরে পেয়ে দুপুরেই হাসপাতালে পৌঁছে যান অরূপ বিশ্বাস, সৌগত রায়-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব৷
বাম জমানায় দীর্ঘদিন তিনি বিরোধী দলনেতা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে কিছু অনুরাগী টালিগঞ্জে তাঁর বাড়িতে ভিড় জমান। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। সারাক্ষণ সেখানে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ছিলেন সাংসদ সৌগত রায়ও। কংগ্রেস ও তৃণমূলের কয়েকজন শোকপ্রকাশও করেন। ১৯৭২ সালে সেই সময়ের বাম-দুর্গ টালিগঞ্জ থেকে প্রশান্ত শূরকে হারিয়ে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে বিধানসভার ভোটে জেতেন। ১৯৯৬ সালে কংগ্রেসের টিকিটে ও ২০০১ সালে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন টালিগঞ্জ থেকে। তৃণমূল তৈরির পর কংগ্রেস ছেড়েছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে অবশ্য অসুস্থতার পর তৃণমূল ও রাজনীতি থেকে দূরে সরে আসেন। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ছাড়াও তৃণমূলের নীতি নির্ধারণ কমিটির চেয়ারম্যান, মুখপাত্র ছিলেন তিনি।
[ফের অঙ্গ প্রতিস্থাপনের নজির শহরে, মৃত যুবক বাঁচালেন চার জীবন]
অসুস্থতার কারণে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন থেকে অবসর নেন তিনি৷ কিন্তু, চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয় প্রাক্তন বিধায়ককে৷ চিকিৎসার খরচ চাতে সরকারি সাহায্য চেয়ে গতবছরই বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠান রাজ্যের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জানান, প্রাক্তন বিধায়কদের চিকিৎসার খরচে সহায়তা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করা হোক৷ পরে বিধানসভার এনটাইটেলমেন্ট কমিটি সর্বসম্মত হয়ে প্রাক্তন বিধায়কের চিকিৎসা খরচ বাড়াতে সম্মত হয়৷ দীর্ঘ দিন ধরেই টালিগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক পঙ্কজবাবু ডায়াবেটিক ও কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। সরকারি ভাবে তাঁর চিকিৎসার খরচ বাড়ানো হলেও বয়সের ভারে ফিরিয়ে আনা যায়নি তাঁকে৷ আজ, সকালে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হাওয়ায় বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ অ্যাম্বুল্যান্সে করে ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরই তাঁর মৃত্যু ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়ায়।
[শহরের রাস্তায় শিকারের সন্ধানে ‘কেপমার গ্যাং’, তৎপর লালবাজার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.