(বাঁদিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং (ডানদিকে) কুণাল ঘোষ
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর জি কর কাণ্ডে প্রতিবাদের নামে উগ্র কুৎসা ও মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা শিল্পীদের তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত জলসায় আমন্ত্রণ নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। এই ইস্যুতে ফের মুখ খুললেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তিনি বলেন, “সেনাপতি (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) ভুল বুঝেছেন, চাইলে ব্যাখ্যা দিয়ে আসব।” তিনি আরও জানান, আর জি কর কাণ্ডের সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় ছিলেন না। চোখের চিকিৎসার জন্য ছিলেন অন্যত্র। সে কারণে সম্ভবত তিনি সবটা জানেন না।
বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে তৃণমূলের তরফে নানা জলসা ও অনুষ্ঠান শুরু হতে গত সোমবার সোশাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্ট করেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। লিখেছিলেন, “তিনমাস আগে ‘চটিচাটা’, সরকার ফেলে দেব, বাংলাদেশের মতো নবান্নের ছাদ থেকে হেলিকপ্টারে করে পালাবে বলা শিল্পীদের আর যাই হোক, এখন তৃণমূল নেতাদের বিনোদনের মঞ্চে ডাকা যেতে পারে না। ওঁরা ডাকলেই আসবেন। কিন্তু ওই কজনকে তৃণমূল কর্মীরা বয়কট করুন।” শিল্পী বয়কট ইস্যুতে মুখ খোলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে ‘সেবাশ্রয়’ কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে কল্যাণ-কুণালদের কুৎসিত আক্রমণ করা শিল্পীদের আমন্ত্রণ না জানানোর তত্ত্ব খারিজ করে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “কোথায় কাকে দিয়ে গান গাওয়াবে, কখন গাওয়াবে, কে গান গাইবে, আমি জোর করে কারও উপর চাপাতে চাই না। আমি কোথা দিয়ে হাঁটব-চলব, সেটা আমার সিদ্ধান্ত। স্বাধীনতা সকলের আছে। আমি ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী।” এর পর অভিষেক প্রশ্নের সুরে পালটা জানতে চান, “পার্টির তরফে কেউ বলেছে? কোনও নোটিস দেখেছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা আমি সাধারণ সম্পাদক হয়ে কিছু বলেছি? দলের রাজ্য সভাপতি বলেছেন?” রাত দখল আন্দোলন নিয়ে তাঁর অবস্থান মনে করিয়ে দিয়ে অভিষেক বলেন, “১৪ আগস্ট যাঁরা রাত দখলের ডাক দিয়েছিলেন, কেউ সমর্থন করুক বা না করুক, আমি তাঁদের সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। আমার পূর্ণ সমর্থন ছিল। আমি আজও একই কথা বলছি। কারও ভালো লাগতে পারে বা খারাপ লাগতে পারে।”
কিন্তু বিকেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কুণাল ফের নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করেন। বলেন, “কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে, কোথাও আমরা সাধারণ প্রতিবাদীদের নিয়ে বিন্দুমাত্র আপত্তি করিনি। ইচ্ছে হলে যে কেউ আমার ফেসবুক বা এক্স-হ্যান্ডলের পুরনো পোস্টগুলি দেখতে পারেন। যাঁরা দলীয় কর্মীদের চটিচাটা, বাংলাদেশের মতো সরকার ফেলে দেব, নবান্নের ছাদ থেকে হেলিকপ্টার করে পালিয়ে যাবে ইত্যাদি বলে মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলকে ব্যক্তি আক্রমণ করে প্ররোচিত করা শিল্পীদের আমাদের দলীয় নেতাদের আয়োজন করা জলসায় ডাকতে বারণ করেছি। মনে রাখতে হবে, প্রতিবাদী আর প্রতিবাদের নামে অসভ্যতা দুটো আলাদা বিষয়। আর শুধুমাত্র ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে প্ররোচনা ও ব্যক্তি আক্রমণ করে কুৎসা করা শিল্পীদের তৃণমূলের আয়োজিত অনুষ্ঠানে না ডাকার কথা বলেছি, অন্যত্র নয়।” এরপরই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে কুণাল বলেন, “তৃণমূল কর্মীরা বিবেক থেকে সিদ্ধান্ত নিন। এই নিয়ে গতকাল যা বলেছি, আজও তাই বলেছি, আগামিকালও একই কথা বলব। এ নিয়ে সর্বোচ্চ নেত্রীর সিদ্ধান্তই শেষ কথা। তিনি যা বলবেন, আমি সেই সিদ্ধান্তই মেনে নেব।” শুক্রবারও এই ইস্যুতে ফের মন্তব্য করেন কুণাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.