ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগে এবার প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly) বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্ত হল তৃণমূল (TMC)। নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে তমলুকের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে শাসকদলের তরফে। তৃণমূলের বক্তব্য, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য মহিলাদের প্রতি চরম অসম্মানজনক। যা সর্বতোভাবে আদর্শ আচরণ বিধির পরিপন্থী। এবং এর ভিত্তিতেই মুখ্যমন্ত্রীকে অশালীন ভাষায় আক্রমণকারী বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ধারায় মামলা রুজু করার আবেদন জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনকে লেখা অভিযোগপত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি লঙ্ঘন করায়’ শ্রী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করা হোক। সেইসঙ্গে, দলের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সবরকমের নির্বাচনী প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হোক। তিনি যেন কোনও জনসভা বা পদযাত্রা করতে না পারেন। পাশাপাশি, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়-সহ সমস্ত বিজেপি নেতা যেন এই ধরনের ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং আপত্তিকর ও অবমাননাকর মন্তব্য’ করা থেকে বিরত থাকেন।
ঘটনার সূত্রপাত সন্দেশখালির স্টিং অপারেশনকে কেন্দ্র করে। যেখানে বিজেপি (BJP) নেতা গঙ্গাধর কয়ালকে বলতে শোনা গিয়েছে , সন্দেশখালির বিজেপির প্রার্থী রেখা পাত্র দুহাজার টাকার বিনিময়ে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা করেছে। ভিডিও সামনে আসতেই বিজেপির নেতারা দাবি করছেন ভিডিওগুলো মিথ্যা, সাজানো। এর প্রেক্ষিতেই হলদিয়ায় এক জনসভায় অভিজিৎ বলেন, “রেখা পাত্র গরিব মানুষ লোকের বাড়িতে কাজ করে খায়, আমাদের প্রার্থী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সুন্দরী নন, একটু বেশি সুন্দরী। সেই জন্য রেখা পাত্রকে ২ হাজার টাকায় কেনা যায়। একজন মহিলা আরেক জন মহিলা সম্পর্কে কী করে এই উক্তি করতে পারেন আমরা ভাবতেও পারি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা তো! আমার মনে প্রশ্ন জাগে মাঝে মাঝে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমি কত টাকায় বিক্রি হও? তোমার হাতে তো ৮ লাখ টাকা গুঁজে দিলে একটা চাকরি দাও। তোমার হাতে ১০ লাখ টাকা গুঁজে দেয় এবং দিয়ে রেশন হাওয়া করে দেয় অন্য দেশে। ভারতবর্ষেই থাকে না সেই রেশন। তো তোমার দাম ১০ লাখ টাকা কেন?”
অভিজিতের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে সরব হন, রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজাও। তিনি বলেন, “একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির কাছ থেকে এই ধরনের আচরণ একেবারেই অনভিপ্রেত। উনি যে মন্তব্য করেছেন তা আমাদের সকলের লজ্জা। তাঁর মনে মহিলাদের প্রতি এই ধরনের বিদ্বেষমূলক ভাবনা থাকতেই পারে, কিন্তু, একজন প্রার্থী হিসাবে এবং একজন মানুষ হিসাবেও একজন মহিলাকে উদ্দেশ করে এই ধরনের অবমাননাকর মন্তব্য করা চরম অন্যায়।” বিজেপির অন্য প্রবীণ নেতারা কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি, সেই বিষয়ও প্রশ্ন তুলেছেন ডা. শশী পাঁজা। তাঁর কথায়, “নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, শুভেন্দু অধিকারী সকলেই তাঁর সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়েছেন। সেখানে তাঁকে বাধা দেওয়া তো দূর, বরং তাঁকে এই ধরনে মন্তব্য করে যাওয়ার ক্ষেত্রেই আরও উৎসাহিত করছেন। এটা স্পষ্ট যে বিজেপি নেতৃত্ব তাঁর এই আচরণকে সমর্থন করে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.