স্টাফ রিপোর্টার: কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীকে লেখা এক কোটি চিঠি সংগ্রহের সময়সীমা আরও ১৫ দিন বাড়ানো হল তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) তরফে। শুধু তাই নয়, যে সমস্ত জেলায় আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) ‘তৃণমূলে নব জোয়ার’ কর্মসূচি রয়েছে, তাঁদের অতিরিক্ত ২/৩ দিন সময় দেওয়া হচ্ছে। বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ধিত রাজ্য কমিটির ভারচুয়াল সাংগঠনিক বৈঠকে দলীয় এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী ১০ মে’র মধ্যে এই চিঠি রাজ্য দপ্তরে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে জমা দিতে হবে। কীভাবে চিঠি সংগ্রহ করতে হবে তার স্পষ্ট গাইডলাইন জানিয়ে সুব্রত বক্সি বলেন, ‘‘ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে রাস্তায় নামতে হবে। সমস্ত শাখা সংগঠন ও পুরনো কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কর্মসূচি হবে। সিনিয়রদেরই এগিয়ে এসে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। মূল লক্ষ্য, প্রতিটি ঘরে ঘরে, প্রতিটি পরিবারকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্প ও পরিষেবায় শামিল করা। জানিয়ে দেওয়া, প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন পড়লেই সরকার প্রত্যেককে কীভাবে সাহায্য করতে পারে।’’
বিজেপির (BJP) চক্রান্তে বাংলার ন্যায্য পাওনা কীভাবে আটকে রেখে কেন্দ্রীয় সরকার বঞ্চনা করছে তা নিয়ে এদিনের বৈঠকে রাজ্যজুড়ে ব্লকে ব্লকে তৃণমূলের নেতৃত্বে প্রতিবাদের ঝড় তোলার নির্দেশ দেন সভাপতি সুব্রত বক্সি। বলেন, ‘‘ন্যায্য পাওনা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এই চিঠি বাংলায় লিখুন। যাতে সমস্ত স্বাক্ষরকারী বুঝতে পারেন। ঘরে ঘরে পৌঁছে সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে বলতে হবে, বিজেপি বাংলা দখল করতে না পেরে চক্রান্ত করে পাওনা কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আটকে দিয়েছে। মানুষের ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটাতে হবে দিল্লির বুকে।’’ ভারচুয়াল বৈঠকে দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করে তৃণমূল নেত্রীর জনসভার বক্তব্য প্রতিধ্বনিত করে রাজ্য তৃণমূল সভাপতি বলেন, ‘‘বাংলার মানুষের নায্য পাওনা আদায়ে বিরোধীদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা দিল্লি যাব। রাস্তায় যদি কোথাও বিজেপি আটকে দেয় তবে সেখানেই আমরা বসে পড়ব।’’
‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে জনমত যাচাইয়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র করে অতি উৎসাহীদের বিশৃঙ্খলা নিয়েও এদিন দলীয় বৈঠকে ব্যাখ্যা করেন রাজ্য সভাপতি। বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস অনেক বড় দল। লক্ষ লক্ষ কর্মী, সমর্থক। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মসূচি ও সরকারি পরিষেবার জেরে রাজ্যের অধিকাংশ মানুষই এখন তৃণমূলকে সমর্থন করেন। সবাই জানে, তৃণমূলের টিকিট পেলে পঞ্চায়েতে জয় নিশ্চিত। তাই তো এত উৎসাহীদের উচ্ছ্বাস ও আবেগ এই জনমত সংগ্রহ বা ভোটকে ঘিরে। আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, আরও বেশি দলীয় শৃঙ্খলার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।’’
এরপরই বৈঠকে তৃণমূলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান সুব্রত বক্সি বলেন, ‘‘নির্বাচন পরিচালনার জন্য জোনাল কমিটির যাঁরা দায়িত্বে আছেন তাঁদের নতুন কিছু গাইডলাইন ও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশন শেষ করে চলে যাওয়ার পরে ওই জোনাল কমিটির সদস্যরা সবাই থেকেই নির্বাচন পরিচালনা করবেন।’’ কারণ অভিযোগ এসেছে, জোনাল কমিটির অনেক সদস্য অভিষেক চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। বস্তুত সেই কারণে ভোট প্রক্রিয়ায় নজরদারি কমে যাওয়ায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.