সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এসএসসি (SSC) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে ধৃত রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের (TMC) মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের পাশেই কার্যত দাঁড়াল দল। শনিবার বিকেলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কার্যালয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠকের পর দলের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর কুণাল ঘোষ সাফ জানিয়ে দিলে, ”বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা রাখছি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে ইডি, তা প্রমাণিত হলে দলগতভাবে এবং সরকারিভাবে ব্যবস্থা নেবে।” তাঁর আরও বক্তব্য, ”টাকার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। যাঁর বাড়ি থেকে এত টাকা উদ্ধার হয়েছে, তিনি তৃণমূলের কেউ নন। এর সঙ্গে জড়িয়ে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা আইনের উপর আস্থা রাখছি। তদন্ত শেষ করে একমাসের মধ্যে চূড়ান্ত বিষয় জানাতে হবে। এত বেআইনি নগদ টাকা এল কীভাবে? সেসব জানা দরকার।” সেইসঙ্গে তিনি এও জানান, তাঁকে কোথায় কোন মঞ্চে তৃণমূলের সঙ্গে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে, তার দায় দলের নয়।
টানা ২৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার সকালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করে ইডি। বিকেলে তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে ২ দিনের হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপরই তাঁর সম্পর্কে অবস্থান স্পষ্ট করতে জরুরি বৈঠকে বসে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, কুণাল ঘোষ, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা। প্রায় আধঘণ্টার বৈঠক সেরে বেরিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তাঁরা।
দলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) স্পষ্ট বলেন, ”নোটবাতিলের পর এত বিপুল টাকা একজনের বাড়িতে কীভাবে এল, তার তদন্ত হওয়া দরকার। তাঁর সঙ্গে জড়িয়েই আমাদের মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু তদন্ত তো অনন্তকাল চলতে পারে না। তাই আমাদের দাবি, একমাস বা দু’মাসের মধ্যে এই তদন্ত শেষ করে টাকার উৎস সম্পর্কে জানানো হোক। বিচারব্যবস্থায় আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আমরা প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির কাছে মাথা নোয়াব না। নিজেদের জনসংযোগ, জনভিত্তির নিরিখে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাব। তাঁদের বোঝাব, বাংলা থেকে প্রত্যাখ্য়াত হয়ে বিজেপি কীভাবে ষড়যন্ত্র আর প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। তার আগে পর্যন্ত দল গোটা বিষয়ের দিকে কড়া নজর রাখছে।”
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করার পাশাপাশি এদিন তৃণমূলের তরফে বিজেপিকেও (BJP) আক্রমণ করা হয়েছে। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় এর আগে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার করে কারাজীবন কাটিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম, প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্য়ায়, মদন মিত্ররাও। তাঁদের কথা উল্লেখ করে কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ”ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে যদিও ভোরবেলা পুলিশ যেতে পারে, তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেতে পারে, তাহলে কেন শুভেন্দু অধিকারীর বাড়িতে গেল না সিবিআই? কারণ, তিনি বিজেপির ‘ওয়াশিং মেশিনে’ ঢুকেছেন। সেটা হলেই সিবিআই, ইডির তদন্তের মুখে আর পড়তে হয় না। তাছাড়া সারদা কর্তা নিজের তাঁর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার কথা বলেছেন একাধিকবার। তবু শুভেন্দুকে ছাড়। কেন?” ফিরহাদ হাকিমও প্রশ্ন তোলেন, ”বিজেপিতে গেলে সবাই সাধু হয়ে যায়, আর তৃণমূলে থাকলেও চোর?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.