রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও কলহার মুখোপাধ্যায়: বুলবুলের ক্ষতিপূরণ থেকে ভোটের ফান্ড জোগাড় করছে তৃণমূল। শনিবার দুপুরে রাজ্য দপ্তরে সাংবাদিক বৈঠক করে এই অভিযোগই করলেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ক্ষতিগ্রস্তদের মিথ্যে তালিকা দিয়ে কেন্দ্রের থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।
রাজ্য বিজেপির মিডিয়া সেলের ইনচার্জ সপ্তর্ষি চৌধুরিকে পাশে বসিয়ে এবিষয়ে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেন দিলীপবাবু। বলেন ‘বুলবুলের ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি করছে তৃণমূল। বিজেপি কর্মীদের ত্রাণ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিডিও বলছেন, লিস্টে নাম নেই। আমাদের মনে হচ্ছে, বুলবুল নিয়ে তথ্য লোকাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই হয়তো রাজ্যপালকে তথ্য জানাচ্ছেন না। তারপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের আটকানো হচ্ছে। এতেও মনে হচ্ছে তথ্য লুকানোর চেষ্টা হচ্ছে। এছাড়া ত্রাণসামগ্রী নিয়েও দলবাজি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কে প্রশ্ন করতে চাই, উনি কি শুধু তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী? মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ৫ লক্ষ বাড়ি ভেঙেছে। কিন্তু, দিল্লির মিটিংয়ে রাজ্যের প্রতিনিধিরা বলছেন ১ লক্ষের কিছু বেশি। আমরা দাবি করছি, ক্ষতিগ্রস্তদের ও ক্ষয়ক্ষতির তালিকা বিডিও অফিস থেকে জানানো উচিত। দুই ২৪ পরগনা, মেদিনীপুর, দাঁতন, কাঁথি, দিঘাতে সার্ভে করে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ির ছবি বিডিও অফিসে রাখা হোক। না হলে ত্রাণ বন্টন ঠিক মতো হবে না। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা বাড়িয়ে বলে ভোটের জন্য কি ফান্ড জোগাড় করছে তৃণমূল?’
বুলবুল নিয়ে মন্তব্য করার পাশাপাশি রাজ্যপালকে তৃণমূল খাঁচায় ভরে রাখতে চাইছে বলেও আজ অভিযোগ করেন দিলীপ ঘোষ। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল বেরোলে অনেক অপ্রিয় সত্য সামনে এসে পড়বে। তাই তৃণমূল রাজ্যপালকে আটকে রাখতে চাইছে। রাজ্যপালকে হেলিকপ্টার না দেওয়ার কি আছে? মেলা, খেলা, রসগোল্লা উৎসবেও তো কত খরচ হয়। মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টার থেকে বাড়ি গুনে নিলেন। উনি যদি হাওয়া খেতে পারেন রাজ্যপালের না খাওয়ার কি আছে।’
রাজ্য দপ্তরে সাংবাদিক বৈঠক করার আগে শনিবার সকালে সল্টলেকে পার্শ্ব শিক্ষকদের অবস্থান বিক্ষোভে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে গিয়ে এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের তুমুল সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, ‘বারবার এনাদের সঙ্গে অমানবিক ব্যবহার করেছে সরকার। অধিকার তো দিচ্ছেই না আন্দোলন করার অধিকারটাই ছিনিয়ে নিচ্ছে। তাঁরা হাই কোর্ট থেকে জাজমেন্ট নিয়ে এসেছেন আন্দোলন করার অধিকার নিয়ে। প্রাথমিক সুবিধাগুলি দেওয়া নিয়ে হাই কোর্ট বলেছে, তা সত্ত্বেও তাঁদের জন্য শৌচালয় ও জলের ব্যবস্থ কিছু করেনি। আমাদের বিজেপির হেলথ সেল ও টিচার সেল যতটা পারছে সাহায্য করছে। আগামীতেও আমরা যতটা পারব করব। সরকার তাঁদের অধিকার কবে দেবে জানি না। তবে আমি আশা করব অন্তত আন্দোলন করার অধিকারটা যাতে তাঁদের দেওয়া হয়।’
অবস্থান বিক্ষোভে উপস্থিত সাংবাদিকরা বিজেপি রাজ্য সভাপতিকে জানান, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় পার্শ্ব শিক্ষকদের এই সমস্যার সমাধানের জন্য কেন্দ্রের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমি এখানকার শিক্ষকদের হয়ে দিল্লিতে যাব। উনি তো দিল্লিতে পৌঁছতে পারেন না। এখানে বন্দি হয়ে আছেন। উনি কমপক্ষে কেন্দ্রীয় সরকার পার্শ্ব শিক্ষকদের জন্য যে ৬০ শতাংশ টাকা দিচ্ছে তা দিয়ে দিন। ওখানে থেকে পার্থবাবু যেন কাটমানি না খান।’
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.